শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম হল মুলো। যদিও এখন সারাবছরই কম-বেশি এই সবজি পাওয়া যায়। তবে সাধারণ সবজি মনে করে এটিকে অনেকেই পছন্দ করেন না। আবার অনেকে এতটাই পছন্দ করেন। কেউ কেউ স্যালাডেও কাঁচা মুলো ব্যবহার করেন। তবে এই সবজির রয়েছে অসাধারণ গুণ। এর উপকারিতা জানলে অবাক হবেন আপনিও।
এবার জেনে নিন মুলার উপকারিতা সম্পর্কে-
বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা মেটাতে শীতের এই সবজির জুড়ি মেলা ভার। মুলো রক্ত পরিশোধন করে। শরীর থেকে বিষাক্ত বর্জ্য বের করতে সহায়তা করে। এটি জন্ডিসের চিকিৎসায় ভীষণ কার্যকরী। কারণ এটি রক্তে বিলিরুবিন নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়।
মুলোর পাতা অনেকেই ফেলে দেন। কিন্তু এই পাতাও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। মুলার পাতায় ভিটামিন A, B, C-র পাশাপাশি ক্লোরিন, ফসফরাস, সোডিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি বর্তমান। এগুলো পেটের জন্য ভালো। পাশাপাশি মূত্র রোগ সারিয়ে তুলতেও অত্যন্ত কার্যকরি।
এই সবজি খেলে ওজন খুব একটা বাড়ার সম্ভাবনা নেই। তাই ওজন কমাতে চাইলে মুলো খাওয়া শুরু করতে পারেন। শীতে হজম প্রক্রিয়া বাড়ায় মুলো। এতে রয়েছে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার, যা কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে। মুলোর রসে লেবু ও লবণ মিশিয়ে খেলে ওজন কমানো যেতে পারে। মুলো ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে। যার ফলে সময়-অসময়ে খাওয়ার ইচ্ছে জাগে না। তাই ওজন কমাতে চাইলে মুলো খাওয়া শুরু করতে পারেন।
কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে মুলো। কারণ, এই সবজি মূত্রবর্ধক প্রাকৃতিক উপাদানে সমৃদ্ধ। এছাড়া এটি রক্তে বিষাক্ত পদার্থের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
হার্ট বা হৃদয়কে সুস্থ রাখে মুলো। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাসিয়াম রয়েছে, যা আমাদের দেহে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা আছে তাদের জন্যও মুলা খুব উপকারী। অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ বৈশিষ্ট্যযুক্ত মুলো উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
এই সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C রয়েছে। যা শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার চিকিৎসায় কার্যকরী মুলো। বিশেষ করে কোলন, কিডনি, ক্ষুদ্রান্ত্র, পেট এবং মুখের ক্যান্সারে খুবই কাজ দেয়।
জন্ডিস রোগীদের জন্য প্যানিসিয়া হিসাবে কাজ করে। এতে উপস্থিত উপাদানগুলো ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে।
মুলোর পাতা ভাজা বা মুলো ভাজা খেলে সর্দি লাগে না। মুলো ও এর পাতা চিবিয়ে খেলে দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর হয়। এর পাতায় উপস্থিত অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল গুণ ফোলাভাব ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। পাইলসের রোগীরা মুলো বা এর পাতার তরকারি খেলে স্বস্তি পেতে পারেন।
মুলো খেলে শরীরে ইউরিন প্রডাকশন বেড়ে যায়। এছাড়াও ইউরিনারী ট্র্যাকে জ্বালা যন্ত্রণা কমাতেও সাহায্য করে। একই সঙ্গে কিডনি আর ইউরিনারী সিস্টেম পরিষ্কার রাখে। নিয়মিত মুলো খেলে লিভার, গলব্লাডার ইনফেকশন আর আলসারের হাত থেকে বাঁচা যায়।