যেকোনও বয়সেই হতে পারে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট। কিছু যোগাসন রয়েছে, যা মেডিকেল চিকিৎসার পাশাপাশি হাঁপানির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অনেক বেশি কার্যকর। আজ দেখে নিন হাঁপানি থেকে মুক্তি পেতে কী কী যোগাসন করতে হবে-
১। সুখাসন
এটিকে সহজ বসার ভঙ্গি বা ‘ইজি সিটিং পোজ’ হিসাবেও ধরা হয়ে থাকে। প্রথমে সামনের দিকে পা প্রসারিত করে ইয়োগা ম্যাটের উপর বসুন। আপনার বাম পা ভাঁজ করুন এবং ডান উরুর ভিতরের দিকে টানুন। একইভাবে আপনার ডান পায়ের সাথেও প্রসেসটি রিপিট করুন। আপনি আরামদায়কভাবে বসে আছেন কিনা দেখে নিন। আপনার মেরুদণ্ড সোজা রাখুন এবং স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিন। আপনি যতক্ষণ পারেন এই পোজটি ধরে রাখুন। প্রতিদিন কিছুক্ষণ এই সুখাসন ব্যায়াম আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য তথা হাঁপানি রোগের জন্য অনেক ভালো।
২। পবনমুক্তাসন
অনেকেই জানেন যে, পবনমুক্তাসন হজমজনিত সমস্যা দূর করে। পাশাপাশি হাঁপানি থেকে মুক্তি দেয়। প্রথমে ম্যাটের উপর পিঠ টানটান করে শুয়ে থাকুন। এরপর আপনার পা প্রসারিত করুন। আপনার ডান পা-টি তুলুন, এবার ডান হাঁটুকে ভাঁজ করে ডান উরুটি বুকের কাছে আনুন। কিছুক্ষণ ধরে রাখুন। এবার বাম পা প্রসারিত করুন এবং আপনার বাম পা দিয়ে একইভাবে বুকের কাছে আনুন। এভাবে দুই হাঁটু ভাঁজ করা অবস্থায় বুকের কাছে ধরে রাখুন। কিছুক্ষণ ধরে রেখে আবার পা প্রসারিত করুন।
৩। প্রাণায়াম
আপনার যদি শ্বাসকষ্টের কোনো ধরনের সমস্যা হয় তবে প্রাণায়ামের চেয়ে ভালো ইয়োগা আমার মতে হতে পারে না। ‘নাদি শোধান’ বা ‘কপাল ভাটি’, যে কোনও ধরনের প্রাণায়াম করতে পারেন। প্রথমে সুখাসনের মতো আরামদায়কভাবে বসুন। তারপর চোখ বন্ধ করুন এবং দুই হাতের তালু দুই হাঁটুতে রাখুন। এবার সম্পূর্ণ মনোযোগ দিন শ্বাস-প্রশ্বাসে। ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে নাকের ডানপাশ চাপ দিয়ে ধরে রাখুন। নাকের বাম পাশ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। ফুসফুস বাতাসের সাথে ভরাট করুন। শ্বাস নেওয়ার পরে, নাকের বাম পাশে ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে রেখে বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে নাকের ডান পাশ ছেড়ে দিন। নাকের ডান পাশ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। আবার নাকের বাম পাশের সাথেও একই প্রসেস রিপিট করুন।
৪। অর্ধমৎসেন্দ্রাসন
এই ব্যায়ামটিকে ‘সিটিং হাফ স্পাইনাল টুইস্ট‘-ও বলা হয়। আসনটি করার জন্য প্রথমে মাদুরের উপরে বসে আপনার পা দুইটি প্রসারিত করুন এবং মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। আপনার বাম পা এমনভাবে বাঁকা করে আনুন যেন বাম পায়ের গোড়ালিটি আপনার ডান কোমড়ের পাশে থাকে। এখন ডান পা বাম হাঁটুর ওপরে নিন এবং বাম হাঁটুর পাশে রাখুন। কোমর ডানদিকে মোড়ান এবং ডান কাঁধের উপর দিয়ে সোজা তাকান। চাইলে ডান হাত পেছনের দিকে এবং বাম হাত ডান হাঁটুর উপরে রাখতে পারেন। মেরুদণ্ড সোজা রাখুন। কয়েক সেকেন্ড আসনটি ধরে রাখুন এবং স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিন। কয়েক সেকেন্ড পর স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসুন এবং ডান পা দিয়ে একইভাবে বিপরীত দিকে করুন।
তবে আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে এই আসনগুলো কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং উপযুক্ত ইয়োগা প্রশিক্ষকের সাথে সম্পূর্ণ পরামর্শের পরে অনুশীলন করা উচিত। আর নয়তো নিজে নিজে হাঁপানি নিরাময় করতে ইয়োগা করা ঠিক নয়।