আমাদের মধ্যে একটি ধারণা চালু আছে যে ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ ভাত। ভাতের বিকল্প হিসেবে এখন অনেকেই দুপুরে বা রাতে আটা বা ময়দার রুটি বা অন্য কিছু খেয়ে থাকেন। এগুলো আবার কারও কারও জন্য অন্য সমস্যা তৈরি করে। কারণ, আটা বা ময়দায় থাকা গ্লুটেন হজমে সমস্যা করে। কিন্তু ভাতে সেই সমস্যা থাকে না।
ভাতের কার্বোহাইড্রেট শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এ জন্য আমাদের মতো অঞ্চলে দুপুরের খাবারে ভাত রাখতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, পরিমাণটা যেন দেড় থেকে দু-কাপের বেশি না হয়ে যায়।আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেট আসে ভাত থেকে, যা রক্তে উপকারী গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। তবে দুপুরবেলায় ভাত খেয়েই ভাতঘুম দেওয়া যাবে না। এতে করে হিতে বিপরীত হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, আটা, ময়দা বা নুডলসে গ্লুটেনের পরিমাণ বেশি থাকে। যে কারণে হজমে বিঘ্ন ঘটে। এতে করে নানা ধরনের শারীরিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। ভাত খেলে হজমের সমস্যা থাকে না বললেই চলে। তাই যাঁরা দুপুরে ভাত না খেয়ে অন্য কিছু খাচ্ছেন, তাঁরা একরকম শরীরের জন্য ক্ষতিকারক উপাদানই গ্রহণ করছেন।
ভাতের কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। যাঁরা বাইরে কাজ করেন, তাঁদের জন্য দুপুরে ভাত তাই উপকারী। এতে করে সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়বেন না।
চেহারার সৌন্দর্য ধরে রাখতে ভাতের ভূমিকা রয়েছে। চুল পড়ে যাওয়া বা ত্বক নিষ্প্রাণ হয়ে যাওয়া, ভাত না খেলে এসব সমস্যা দেখা দেয়। এর কারণ হিসেবে এই পুষ্টিবিদরা মনে করেন, আমাদের শরীরের যে ছ’রকম খাদ্য উপাদান দরকার, তার একটি না পেলে ভেতর থেকে শরীর তার সৌন্দর্য হারায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য হঠাৎই ভাত খাওয়া বন্ধ করে দিলে পরে অতিরিক্ত খিদে পেতে পারে। এই যেমন দুপুরবেলায় আপনি ভাত খেলেন না, তখন দেখা যাবে বিকেলে বা সন্ধ্যেয় বেশি খিদে পাচ্ছে। আর এতে করে বেশি খাওয়া হয়ে যায়। আবার যাঁরা নিয়মিত দুপুরে ভাত খেতে অভ্যস্ত, তাঁরা দুপুরে ভাত না খেলে একধরনের মানসিক অস্থিরতায় ভোগেন, যা দৈনন্দিন কাজেও প্রভাব ফেলে। এ জন্য হঠাৎ দুপুরের খাবারের তালিকা থেকে ভাত বাদ না দেওয়াই ভালো।
ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভাত যদি বাদই দিতে চান, তবে সেটা দুপুরে নয়। এর পরিবর্তে রাতে বা সকালে ভাত না খেয়ে অন্য খাবার খেতে পারেন।