শিশুর প্রথম হাঁটা, প্রথম কথা বলা, প্রথমবার ‘মা’ বলা– প্রতিটি মুহূর্তই একেকটি আনন্দধ্বনি একেকটি পরিবারে। কিন্তু যদি সেই ছোট্ট মুখটি ডাকে সাড়া না দেয়? চোখে চোখ না রাখে? অথবা সবার সঙ্গে না মিশে একা নিজের জগতে ডুবে থাকে? – তখনই শুরু হয় প্রশ্ন, দুশ্চিন্তা আর ভয়। অনেক সময় এসব লক্ষণকে ‘ধীরে শেখা’ বলে উপেক্ষা করা হয়। অথচ এগুলোই হতে পারে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারের (ASD) প্রাথমিক ইঙ্গিত। কিন্তু কীভাবে বুঝবেন যে আপনার সন্তান অটিজমে আক্রান্ত এবং তারপর কী করবেন? জেনে নিন-

অটিজমের কিছু সাধারণ প্রাথমিক লক্ষণঃ
১। সময়মতো কথা বলতে না পারা অথবা কথা বলতে শুরু করলেও হঠাৎ থেমে যাওয়া।
২। অন্যের কথা বুঝতে সমস্যা হওয়া।
৩। অঙ্গভঙ্গি বা ইশারা ব্যবহার করতে সমস্যা হওয়া।
৪। বারবার নাম ডাকলেও প্রতিক্রিয়া না দেওয়া।
৫। চোখের দিকে তাকাতে বা চোখে চোখ রেখে কথা বলতে সমস্যা হওয়া।
৬। একা থাকতে পছন্দ করা, অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলতে বা মিশতে না চাওয়া, সামাজিক সম্পর্ক এড়ানো।
৭। একই শব্দ বা কাজ বা খেলনা দিয়ে খেলা বারবার করা।
৮। প্রতিদিনের কাজ বা পরিবেশ বদল হলে অস্থিরতা।
৯। কোনও বিশেষ জিনিসের প্রতি অতিরিক্ত আকর্ষণ থাকা।
১০। হালকা আলো, শব্দ, বা স্পর্শের প্রতি বিরক্তি বা ভয়।
১১। ঘুমের সমস্যা, খাওয়ার সমস্যা হওয়া।
১২। অন্যদের কাজ বা অভিব্যাক্তি অনুকরণ না করা বা সমস্যা হওয়া।
বাবা-মায়ের করণীয়ঃ
যদি উপরের লক্ষণগুলির কয়েকটাও আপনার শিশুর মধ্যে লক্ষ্য করেন, তবে দেরি না করে শিশু বিকাশ বিশেষজ্ঞ, শিশু চিকিৎসক বা একজন চাইল্ড সাইকোলজিস্ট-এর পরামর্শ নেওয়া উচিত। যত তাড়াতাড়ি অটিজম নির্ণয় হয়, তত দ্রুত উপযুক্ত থেরাপি ও পরিচর্যার মাধ্যমে শিশুর বিকাশে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারা যায়।
মনে রাখবেন, প্রতিটি শিশুই বিশেষ– একটু বাড়তি যত্ন ও সচেতনতাই তাদের জন্য নতুন পথ খুলে দিতে পারে।