বার্ধক্যের সঙ্গে যেমন, তেমনি জীবনধারার সঙ্গেও রয়েছে স্মৃতিভ্রমের সম্পর্ক। প্রাকৃতিক নিয়মে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার ব্যাপারটাকে পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব নয়। তবে বয়সের আগেই যাতে এমন সমস্যায় না পড়েন, সেই চেষ্টা করতেই পারেন। স্মৃতি শক্তি বাড়ানোর বেশ কিছু পদ্ধতি আছে। কিছু টিপস মেনে চললেই স্মৃতি শক্তি বাড়ানো সম্ভব।
ঘুম–
ঘুমের ব্যাপারে অনেকেই ভীষণ উদাসীন। মুঠোফোন বা অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইসেই পার হয়ে যায় ঘুমের জন্য বরাদ্দ সময়ের অনেকটা। ভাবখানা এমন, ‘ঘুম আসছে না, তাই ঘুমাচ্ছি না!’ অথচ ডিজিটাল ডিভাইসের নীল আলো আপনাকে ঘুমের উল্টো পথে নিয়ে যেতে পারে। রোজ ৭ থেকে ৯ ঘণ্টার ঠিকঠাক ঘুম শরীর এবং মস্তিষ্কের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কম ঘুমাতে ঘুমাতে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কখন কমে আসবে, টেরও পাবেন না। ঘুম যদি ছাড়া ছাড়া হয়, তাতেও কিন্তু মুশকিল।
নিশ্চিত করুন পুষ্টি–
ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন কে-র ঘাটতির কারণে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তাই রোজ সূর্যালোকে থাকুন কিছুটা সময়, যাতে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি তৈরি হয় আপনার দেহে। প্রচুর শাকসবজি খান। ‘হোল গ্রেইন’ বা গোটা শস্যদানা গ্রহণের অভ্যাস গড়ে তুলুন। ফলমূলও খাওয়া চাই। আপেল, আঙুর, কলা, কমলা, স্ট্রবেরি প্রভৃতি ফল খেতে পারেন।
স্মৃতি বাড়ানোর ব্যায়াম–
শব্দের খেলা, সুডোকু, ধাঁধা প্রভৃতির মাধ্যমে মস্তিষ্কের ব্যায়াম হয়। বই পড়ুন। এর ফলে মস্তিষ্ক সচল থাকবে। নতুন কোনো কাজ শেখার জন্য সময় ব্যয় করতে পারেন। শেখার কিন্তু আসলেও কোনো বয়স নেই। বহু বিষয় আজকাল অনলাইন থেকেও শেখার সুযোগ আছে। ছোটবেলায় কড়া শাসন বা পড়াশোনার চাপে নিজের শখের যে কাজটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিখতে পারেননি, সেটাই না হয় শিখতে শুরু করুন। নতুন ভাষাও শিখতে পারেন, নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করতে পারেন। মস্তিষ্ক উপকৃত হবে।
শরীরচর্চা করুন–
শরীরচর্চা করলে মস্তিষ্কের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। স্মৃতি ধরে রাখা সহজ হয়। আবার শরীরচর্চা করলে ঘুম ভালো হয়, মানসিক চাপ সামলানোও সহজ হয়। এই সবকিছুর সম্মিলিত প্রভাবেও আপনার স্মৃতিশক্তি ভালো থাকবে।
সামাজিক পরিসরে সময় কাটান–
পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে কাটানোর জন্য কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখুন। তাহলে স্মৃতিশক্তিও ভালো থাকবে। নতুন বন্ধুও তৈরি করতে পারেন। আপনার সঙ্গে পছন্দ মেলে, এমন কিছু মানুষকে খুঁজে বের করতে চেষ্টা করুন। হাঁটাহাঁটি বা শরীরচর্চাও করতে পারেন একজন সঙ্গীকে পাশে নিয়ে।