Spread the love

ভারতের ভূ-স্বর্গ কাশ্মীর ভ্রমণের ইচ্ছা কম বেশি আমাদের সকলের থাকে। তবে বাজেটই হয়ে পড়ে পথের কাঁটা। তাই হাতে দুই থেকে তিন দিনের ছুটি থাকলে কম বাজেটেই, ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি ও কোলাহল ঝেড়ে ফেলে পাহাড়, মেঘ, ঝরনা, সবুজ আর স্নিগ্ধতার সঙ্গে একটু সময় ভাগ করে নিতে চাইলে ‘ওড়িশার কাশ্মীর’ দারিংবাড়ি হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য। 

কীভাবে যাবেন

  • হাওড়া ও সাঁতরাগাছি থেকে ব্রহ্মপুরগামী ট্রেনে ব্রহ্মপুর স্টেশন পর্যন্ত যেতে হবে।
  • এরপর বুক করা গাড়িতে ১৩০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পৌঁছে যাবেন আপনার গন্তব্যে।
  • দারিংবাড়ি যাওয়ার নিকটতম বিমানবন্দর হল ভুবনেশ্বরের বিজু পট্টনায়ক বিমানবন্দর। এখান থেকে দারিংবাড়ির দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার।

কোথায় থাকবেন

দারিংবাড়িতে এলে রোড সাইডে অনেক হোটেল পেয়ে যাবেন, আপনার পছন্দ ও বাজেট অনুযায়ী হোটেল বেছে নেবেন। এখনকার বেশিরভাগ হোটেল থেকেই পাহাড়ি অপরূপ শোভা উপভোগ করতে পারবেন।

  • হোটেল ইউটোপিয়া ( ৭০০৮২৪০৫৪৮ / ৯৪৩৭৭৮১৯৭২)  
  • হোটেল সাইন ইন (৭৯৭৮১০৬৭৪২ / ৯৪৩৮০৪৩৩৭১)  

কী কী দেখবেন

সাইটসিনের জন্য স্টেশনের বাইরে থেকেও গাড়ি বুক করতে পারেন। অথবা যে হোটেলে থাকবেন তাদের গাড়িও বুক করে নিতে পারেন।

  • সুরাদা ড্যাম: এই ড্যামে গেলে দেখতে পাবেন, চারিধারে অসংখ্য ছোটো ছোটো পাহাড়ে মাঝে এক বিশাল জলরাশি, যার সৌন্দর্য্য মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো।
  • হুলহুলা গুন্ডা: বড় বড় পাথরের গা বেয়ে সশব্দে বয়ে চলেছে স্রোতস্বিনী হুলহুলা গুন্ডা নদী এই অপরূপ শোভা আপনাকে মুগ্ধ করবে।
  • সানসেট পয়েন্টঃ ঠিক সূর্যাস্ত যাওয়ার মুখে এই পয়েন্টে ভিজিট করতে ভুলবেন না।
  • হিল ভিউ পয়েন্টঃ এই ভিউ পয়েন্ট থেকে পাহাড় ঘেরা বিস্তীর্ণ অঞ্চলটিকে দেখলে মন ভরে যাবে। হিল ভিউ পয়েন্টে মাথাপিছু এন্ট্রিফি পড়বে ১০ টাকা করে।
  • মান্দাসুরু ওয়াটারফলসঃ প্রায় ৪০০ মিটার ট্রেকিং করে পৌঁছাবেন এই গন্তব্যে। যাদের পায়ের সমস্যা তারা এই স্পটকে এড়িয়ে চলবেন।
  • মান্দাসুরু টুরিস্টস্পটঃ এখানে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা। যেখান থেকে দেখা যায় ম্যাগনেট হিল। অনেকে বলেন এই পাহাড় যে কোনও ধাতব বস্তুকেআকর্ষণ করে, তাই এর ওপর দিয়ে হেলিকপ্টার ও প্লেন যাতায়াত করে না।
  • জিরাং মনেস্ট্রিঃ একে বলা হয় লিটিল তিব্বত। এখানে এন্ট্রিফি ৫ টাকা। আর এই মনেস্ট্রি খোলা থাকে সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১২ টা এবং দুপুর ২ টো থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত।
  • মিডুবান্দা ওয়াটারফলসঃ প্রায় ১২০ টি সিঁড়ি নেমে পৌঁছাতে পারবেন এই ওয়াটারফলসের কাছে।এখানে গাড়ি পার্কিং এর চার্জ ৫০ টাকা।
  • কফি গার্ডেনঃ এখানে এলে কফি চাষ ও গোলমরিচ চাষ স্বচক্ষে দেখতে পারবেন। এই গার্ডেনের এন্ট্রিফি ১০ টাকা।

এছাড়া এই ট্যুরে দেখে নিতে পারেন, তপ্তপানি উষ্ণপ্রস্রবণ, ঘন্টেশ্বরী মন্দির, ডিয়ার পার্ক, খাসাদা ওয়াটারফলস, লাভারস ভিউ পয়েন্ট, এমু পার্ক যেখানে পাবেন এমু পাখির দর্শন, এবং এন্ট্রিফি মাত্র ১০ টাকা।

কী কী খাবেন

  • দারিংবাড়িতে এলে অবশ্যই আদিবাসী চিকেন ট্রাই করুন, সম্পূর্ণ মাটির হাঁড়িতে, কাঠের জ্বালে হওয়া এই চিকেনের স্বাদ মুখে লেগে থাকতে বাধ্য।
  • এছাড়া এখানকার স্থানীয় ভুট্টা, পাখালা, ডালমা ও বিভিন্ন মশলা দিয়ে তৈরি চা খাওয়া মাস্ট।

যাওয়ার সেরা সময়

  • মূলত দারিংবাড়ি যাওয়ার সেরা সময় অক্টোবর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত।

কেনাকাটা

দারিংবাড়িতে এলে কফি গার্ডেন এর বাইরে থেকে বেশ কিছু মশলা কিনে নিতে পারেন, কারণ এই মশলাগুলো একদম অর্গানিক ভাবে তৈরি করা হয়।

মাথায় রাখুনঃ

  • সবসময় রাতের দিকে ট্রেন ধরুন। রাতে ট্রেন চাপবেন ও সকালে গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন। এতে সময় সাশ্রয় হবে।
  • ব্রহ্মপুর স্টেশন থেকে দারিংবাড়ি যাওয়ার পথে বেশ কিছু সাইটসিন করে নিন, এতে সময় বাঁচবে।
  • এখানে শুধুমাত্র জিও ও বিএসএনএল -এর টাওয়ার ধরে। এয়ারটেল বা ভোডাফোন -এর সিগন্যাল থাকে না, তাই আসার আগে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts