Spread the love

বারাণসী একটি প্রাচীন শহর, যা বেনারস বা কাশী নামেও পরিচিত। বিশ্বের প্রাচীনতম অবিচ্ছিন্ন জনবসতি শহরগুলির মধ্যে একটি। হিন্দুদের জন্য একটি প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র হলেও, এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে সারা বিশ্ব থেকে অনেক পর্যটক আসেন এবং আধ্যাত্মিকতা খুঁজে পান। আসলে, এখানে প্রচুর সংখ্যক বিদেশী দর্শনার্থী রয়েছে। আপনি শহরের অনেক জায়গায় বিভিন্ন বিদেশী ভাষার চিহ্ন পাবেন। শিক্ষা ও সঙ্গীতের জন্যও বারাণসী একটি প্রধান কেন্দ্র। হাজার হাজার বছর ধরে সাংস্কৃতিক তাৎপর্য ধরে রাখা শহর। তাই, যখন মনে হবে বারাণসী যেতে চান, এই চারটি ভিন্ন অভিজ্ঞতা আপনাকে অর্জন করতেই হবে।

১. গঙ্গার তীরে একা হাঁটা

বারাণসীর ঘাটগুলি সারা বিশ্বে সুনাম অর্জন করেছে। সারা দিন প্রচুর নৌকা চলাচল করে। নদীর তীরে মোট ৮৮ টি ঘাট রয়েছে এবং একটি নতুন সরকারি উদ্যোগে আপনি ‘ঘাট-ওয়াক’ করতে যেতে পারেন। দেওয়াল জুড়ে আছে ট্রিপি গ্রাফিটি, শত শত ধাপে জলের দিকে নামছে এবং আকাশ অন্ধকার হওয়ার পরে নিরাপত্তার জন্য উজ্জ্বল আলোও দেওয়া আছে। যদিও এটা একদিনেই ঘুরে ফেলা সম্ভব, তবুও পরামর্শ দেব, আপনি যেখানেই আকর্ষণীয় কিছু খুঁজে পাবেন সেখানেই থামুন। কয়েকটি প্রধান ঘাট যেমন- দশাশ্বমেধ, অসি, মণিকর্ণিকা, পঞ্চ গঙ্গা। তবে আরও অনেক ঘাট পাবেন, যেখানে আপনি চাইলে ঘুরে দেখতে পারেন।

২. ভালো ভালো খাবার খাওয়া

স্থানীয় খাবারগুলো খুব সুস্বাদু। শহর জুড়ে হাজার হাজার বিক্রেতা রয়েছে যারা বিভিন্ন ধরনের চাট, পুরি-সবজি, মিষ্টি এবং সব ধরনের স্ন্যাকস্‌ বিক্রি করে। তবে মনে রাখবেন, এটি এমন একটি শহর যেখানে হাজার হাজার বছর ধরে দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। সুতরাং, এটা স্বাভাবিক যে এখানে ভিন্ন দেশের খাবার পেয়ে যাবেন। এখানে হাতে বানানো পাতলা-ক্রাস্ট পিজ্জা, বিবিমবাপ থেকে শুরু করে স্নিটজেল, হট ডগ ইত্যাদি বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জায়গার কিছু না কিছু খাবার আছে।

বারাণসীতে আপনার মুডের পরিবর্তন চাইলে, শহরের বিখ্যাত ‘ভাং’ ট্রাই করে দেখুন। শুধু নিশ্চিত হোন, যে পরিবেশে খাচ্ছেন সেটা নিরাপদ কিনা।  

৩. আধ্যাত্মিকতা খোঁজে

বারাণসী হল আধ্যাত্মিকতার জায়গা, যেখানে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের জীবনের নানা প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে এর দরজায় কড়া নাড়ে। তবে এর জন্য উপাসনার স্থানেই থাকতে হবে, এমন কোনও আবশ্যকতা নেই। নিরিবিলি ঘাটগুলির যেকোনও একটির হোটেলে থাকুন। যাতে নদীর ধারের জীবনকে উপভোগ করতে পারেন এবং শান্ত মনে উপাসনা করতে পারেন। আপনি যদি আরও স্ট্রং কানেকশন প্রয়োজন বলে মনে করেন তাহলে, শহর থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে সারনাথের দিকে যান। এটি বৌদ্ধ এবং জৈন উভয় ধর্মের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ স্থান। আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি, সারনাথ ইতিহাসের একটি আকর্ষণীয় আভাসও দিতে পারে।

৪. লোকাল জিনিসপত্র কেনাকাটা

হাজার হাজার বছর ধরে সভ্যতার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হওয়ায়, বারাণসীকে বিভিন্ন হস্তশিল্প খুঁজে পাওয়ার জায়গা হিসাবে সমাদৃত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় হল রেশম বয়ন ও রেশম শাড়ি, যা আজ সারা বিশ্বে রপ্তানি করা হয়। এখানে পিতলের পাত্র, তামার পাত্র, হাতির দাঁতের কাজ, কাঁচের চুড়ি, কাঠ, পাথর ও মাটির খেলনা, ভাদোহি কার্পেট এবং বাদ্যযন্ত্রও রয়েছে। মন্দির বা ঘাটের কাছাকাছি স্থানীয় জিনিসগুলো নিয়ে আপনার খুব বেশি ঘাঁটাঘাঁটি করার দরকার নেই, কারণ ওখানে সব অতিরিক্ত দাম হতে পারে। চেষ্টা করুন, কেনাকাটার জন্য বিভিন্ন এলাকায় যেতে, তাহলে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করে আপনার পছন্দের জিনিসগুলো নিতে পারবেন।  

Related Posts