Spread the love

সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঘাড় ঘোরাতে পারছে না সূর্য। অগত্যা অফিস বন্ধ। পেশার তাগিদে কখনও বা নিজ স্বভাব– অকালেই জানান দেয় ক্ষয় হচ্ছে ঘাড়ের হাড়। তাই বশে রাখতে ঘাড়ের কলকবজা, ট্রাই করতে পারেন ‘পঞ্চকর্মা’র গ্রীবাবস্তি।

‘সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলোসিস’– আধুনিক জীবনযাপনের অসুখ। এই রোগের কোনও বয়সসীমা নেই। সাধারণত যাঁরা ঘাড় ঝুঁকে একনাগাড়ে অনেক সময় কাজ করেন বা ঘাড়ে ঝাঁকুনি লাগে এমন কাজ করে থাকেন, তাঁরাই বেশি এই রোগে আক্রান্ত হন। এক্ষেত্রে শিরদাঁড়ার অস্থি-সন্ধিস্থলে থাকা তরল জেল বাইরে বেরিয়ে আসে। তখনই বাসা বাঁধে ব্যথা। যেমন ঘাড় নাড়ানো তো দূর অস্ত, সারাক্ষণ টনটন করে ব্যথায় হাল হয় নাজেহাল।

এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শুধু ওষুধ যথেষ্ট নয়, বদলাতে হবে অভ্যেসও, সঙ্গে আবশ্যক কিছু ব্যায়াম। কিন্তু এসবের সময়-সুযোগ কোথায়! তাই সহায় একমাত্র ওষুধ। আর রোজ রোজ এই পেনকিলার খাওয়া শরীরের পক্ষে যে কতটা হানিকর, তা নতুন করে আপনাদের বলে দিতে হবে না। কিন্তু জেনেও উপায় নেই! যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পেতে মেডিসিন একমাত্র সম্বল। তবে এই ধারণা এখন ভুল। প্রাচীন আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতিতে শুধুমাত্র তেল মাসাজের মাধ্যমে ব্যথার নিরাময় করা হচ্ছে।

আয়ুর্বেদ চিকিৎসার পঞ্চকর্মা পদ্ধতির ‘গ্রীবাবস্তি’ থেরাপির মাধ্যমে ঘাড়ের যন্ত্রণার চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। এর কতগুলি ধাপ রয়েছে। প্রথমে রোগীকে উপুড় করে শুইয়ে ঘাড়ে, গলায় তেল মাসাজ করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে ব্যথার কেন্দ্রস্থল গমের আটা ও কড়াইয়ের ডাল দিয়ে তৈরি মন্ড দিয়ে ভালো করে ঘিরে দেওয়া হয়।

এরপর হালকা গরম তেল গোলাকার বেড়ির মধ্যে ধীরে ধীরে ঢালা হয়। তেল ঠান্ডা হয়ে গেলে তা তুলে নিয়ে পুনরায় ঈষদুষ্ণ তেল ঢালা হয়। এভাবে তিন থেকে চারবার তেল বদলানো হয় । শেষে ঘাড় ও গলা ভালো করে মুছে দেওয়া হয়, যাতে তেল চিপচিপ বোধ না হয়। গোটা এই থেরাপিতে ব্যবহৃত তেলে নানান রকমের ভেষজ গুণ আছে, যা ব্যথা উপশমে দারুণ কার্যকরী। তাছাড়া শুধু একটি নয় সূর্যমুখীর তেল থেকে তিলের তেল, মহানারায়ণ তেল, মুরচিট তিলা তেল, আমন্ড ওয়েল, নিম তেল, ব্রাহ্মী তেল, ভৃঙ্গরাজ তেল-সহ নানান রকমের তেল প্রয়োগ করা হয় । তবে অবশ্যই তার ব্যবহার রোগীর বায়ু, পিত্ত, কাফ পরীক্ষা করে, শারীরিক চাহিদা অনুযায়ী করা হয়।

Related Posts