অপ্রত্যাশিত ভাবে আপনার হার্টের কাজ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। একে সাডেন কার্ডিয়াক অ্যাটাক হলে চিকিৎসার সময় খুব কম পাওয়া যায়। এই সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আমাদের জানালেন প্রখ্যাত কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ শুভ্র ব্যানার্জি।
সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট কি?
আকস্মিকভাবে হার্টের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়াকে ডাক্তারি ভাষায় সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বলে। এ ক্ষেত্রে হার্টের অসুখ আছে বলে আগে থেকে জানা না-ও থাকতে পারে। আপাতদ্ষ্টিতে সুস্থ ও স্বাভাবিক বলেই মনে হয়।
হার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ কী?
যে Electric Signal হার্টকে চালায় তা হঠাৎ খুব বেড়ে যাওয়ায় হার্টের গতি খুব অস্বাভাবিক হয়ে যায়। এর ফলে হার্ট ঠিকমতো রক্ত সঞ্চালন করতে পারে না। মাথায় অক্সিজেন পরিবহণও কমে যায়। রোগী তৎক্ষণাৎ অজ্ঞান হয়ে যায়। অতি শীঘ্র চিকিৎসা শুরু না করতে পারলে রোগীর ম্ত্যু অনিবার্য।
সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ কাদের হয়?
এ ক্ষেত্রে দেখা যায় যাদের কোনও হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের তো সাডেন কার্ডিয়াক অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কিন্তু পঞ্চাশ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগী এমনিতে সুস্থ ও সবল মনে হয়। এবং কখনও হার্টের সমস্যা ধরা পড়েনি এমন মানুষেরও সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ হয়েছে। এই রোগ হওয়ার সব থেকে বেশি সম্ভবনা থাকে যাদের Coronary Artery Disease রয়েছে। এ ছাড়া মায়োকার্ডাইটিস (Myocarditis). WPW সিনড্রোম, এ-সব সমস্যাতেও হতে পারে। জন্মগত হ্দরোগেও এই রকম হতে পারে।
এই লক্ষণগুলো কি কিছু বোঝা যায়?
যাদের হার্টের কর্মক্ষমতা কমে গেছে, যাদের পরিবারে আকষ্মিক ম্ত্যুর কোনও ইতিহাস রয়েছে, তাদের রিস্ক বেশি। তবে অনেক সময় কোনও লক্ষণ ছাড়াই এই রোগ হঠাৎ দেখা যায়। তার জন্য নিয়ামিতভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
হার্ট অ্যাটাক এবং সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
এ দুটির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে – যে ধমনী থেকে হার্টের পুষ্টি ঘটে তা যদি বন্ধ হয়ে যায়, তখন হার্টের পেশিসমূহ নষ্ট হয়ে যায়। একে বলে হার্ট অ্যাটাক। আর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এমন মানুষের সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ হতে পারে। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে আমরা অনেক সময় যা শুনি তা আসলে সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ।
আমরা কীভাবে বুঝব কাদের এমন কিছু গটতে পারে?
হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, (অন্যান্য কারণেও মানুষ অজ্ঞান হতে পারেন, যেমন – ম্গী বা মস্তিষ্কের কোনও রোগের কারণে অজ্ঞান হলে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস চালু থাকবে) এক্ষেত্রে হার্ট বিট বন্ধ হয়ে যাবে। সঙ্গে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসও বন্ধ হবে নিশ্চয়ই।
এই সময় কী করা উচিত?
হার্টের অ্যাবনর্মাল রিদম বা হার্টের অস্বাভাবিক চলাচল এই সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের মূল কারণ এটা আমরা জেনেছি। তাই হার্টের স্বাভাবিক ছন্দ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে করতে হবে। হার্টের ওপর বৈদ্যুতিক শক দিয়ে সাধারণভাবে ছন্দ ফিরিয়ে আনা হয়। একে বলে defibrillation. এর জন্য এক ধরণের বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, যার দ্বারা হার্টে শক প্রদান করা হয়। এই জন্যই রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ভীষণ জরুরি, তা না হলে ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই রোগীর ম্ত্যু ঘটে।
হাসপাতালে পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত কি কিছু করা যেতে পারে?
যেটা করা যেতে পারে সেটা হল CPR(কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন) করতে করতে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। এতে রোগীর ক্ষেত্রে কিছুটা সময় পাওয়ার চান্স থাকে।
CPR বা কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন কী?
এটি একধরনের প্রক্রিয়া যায় মাধ্যমে ফুসফুসকে সাহায্য করা হয় অর্থাৎ চালু রাখার চেষ্টা করা হয়। প্রক্রিয়াটি এই রকম – মুখে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস – প্রশ্বাস চালু রাখা হয়। একই সঙ্গে বুকে বিশেষভাবে মালিশ করা হয় এবং হার্টকে চালু রাখার চেষ্টা চলে।
সাধারণ মানুষ কী এই প্রশিক্ষণ পাবে?
বিদেশে জনসাধারণের জন্য এই ধরণের যন্ত্রপাতি বা ডিফিব্রিলেটর রাখা হচ্ছে। এগুলি সাধারণ মানুষও ব্যবহার করতে পারেন। এদের বলে Portable Automatic Defibrillator,এতে Voice Prompt থাকে, যাতে সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পারে। আমাদের দেশে প্যারামেডিক্স পেশায় বা ট্রাফিক পুলিশদের জন্য এই ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা করা উচিত।
কী কী সাবধানতা নেওয়া যেতে পারে?
সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে বাঁচার সম্ভাবনা আর সময় দুটোই পাওয়া যায় না। এই জন্য Prevention of SCA is very importan.
ধূমপান অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। তেল, ঘি, চর্বিযুক্ত খাবার কম খেতে হবে। রক্তপরীক্ষা করে রক্তে চর্বির পরিমাণ দেখে নিয়মিত ওষুধ খাওয়া এবং বেশি থাকলে তা কমানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম বা এক্সাসাইজ একান্ত দরকার। উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার, এর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ দরকার।
যারা এই ধরনের রোগ থেকে বেঁচে ফিরেছেন তাদের ICD বলে এক ধরনের বিশেষ যন্ত্র লাগাতে হতে পারে। এই যন্ত্র কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বা হার্টের ছন্দ এলোপাথড়ি হলে আপনা থেকেই শক দিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম।
গ্লোবাল ইমোশন সার্ভে বলছে পৃথিবীতে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪... Read More
শীত পড়লেই বাজার ছেয়ে যায় রঙিন শাক-সবজিতে। নানা রকম মরশুমি... Read More
সবজিটি দামে সস্তা, আর শীতকালে ফলেও প্রচুর। কিন্তু সবজি হিসেবে... Read More
আজকের দিনে গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন না এরম মানুষ খুঁজে বেশ... Read More
শুষ্ক শীতে ত্বক এবং চুলও হয়ে ওঠে রুক্ষ এবং জৌলুসহীন।... Read More
বর্ষাকালে ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ বাড়ে। এ জন্য রোগ বালাই... Read More
কোলেস্টেরল শব্দটা শুনলেই অনেকেই আঁতকে ওঠেন। আমাদের জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে... Read More
চল্লিশের দোরগোড় মানেই হাজির হয় হাঁটুর ব্যথা, গাঁটের ব্যথার মতো... Read More
পেটে অল্প অল্প ব্যথাকে আমরা অনেক সময় গুরুত্ব দিই না।...
দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বােঝার মতাে মানুষ এ সংসারে বিরল।...
রাতে ঘুম ঠিকমতো হওয়ার পরেও সারাদিন ঘুম পায়? সারাক্ষণ ক্লান্তিভাব...
বর্তমান সময়ে এলার্জি এখন ঘরে ঘরের সমস্যা। কারও ক্ষেত্রে এলার্জি...
জানেন কী? মহিলাদের হৃদরােগ ধরা পরার সম্ভাবনা কম থাকে। পুরুষের...
একটা সময় ছিল, যখন মানুষের কিডনিতে সমস্যা দেখা দিত অন্ততপক্ষে...
আপাতত ঘরের ভেতর সকলেই। বাতাস থেকে দূষণের মাত্রাও কমে যাচ্ছে...
স্লিম ট্রিম হওয়ার জন্য ব্যায়াম করতে বলা হয়, কিন্তু ওজন...
পরিবেশ দূষণ, ধুলা-বালি ইত্যাদি কারণে প্রায় অনেকেরই চোখে এলার্জি সমস্যা...
পথ চলতি রাস্তার ধারে বা বাড়ির আশেপাশে কতই না গাছপালা...