jamdani

বসন্তের রঙ সারা দেশ জুড়ে

ভারতীয় ঐতিহ্যের সঙ্গে যুগ যুগ ধরে মিশে আছে দোল বা হোলি। বসন্তের আগমনে রঙে ভাসেন না এমন খুব কম জনই আছেন। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের জানা-অজানা নানা হোলির গল্প নিয়ে হাজির আমরা-

ফাগুয়া

হোলি উৎসব বিহারে ফাগুয়া নামে পরিচিত। এখানে দোলের আগের দিন হোলিকা দহন করা হয়। যদিও এই আচার এখন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলেই পালন করা হয়। পুরাণ অনুযায়ী, রাজা হিরণ্যকশ্যপের পুত্র প্রহ্লাদ বিষ্ণুর ভক্ত হয়ে উঠলে রাজা তাঁর বোন হোলিকাকে নির্দেশ দেন প্রহ্লাদকে মারতে হবে। কিন্তু হোলিকা নিজেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বিভিন্ন পণ্ডিতের মতে এই হোলিকা দহন থেকেই হোলি নামের উৎপত্তি।

লাঠমার হোলি

উত্তরপ্রদেশে এই সময়ে পালিত হয় ‘লাঠমার হোলি’। স্থানীয় ভাবে এই উৎসবকে হোলি মিলানও বলা হয়। উত্তরপ্রদেশের বরসনা, মথুরা ও বৃন্দাবন এলাকার মানুষ প্রতিবছর মেতে ওঠেন এক মজার উৎসবে। শুধু রং খেলাই নয়, এই উৎসবের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে মজার একটি রীতিও। শুনলে অবাক হবেন, রীতিমতো লাঠিসোঁটা নিয়ে পুরুষের পিছনে এই সময় তাড়া করেন বাড়ির মহিলারা। মিথ্যে মিথ্যে নয়, সত্যিই মারধর করা হয়। মাথা বাঁচানোর জন্য পুরুষদের কাছে থাকে একটি ঢালও। সেই ঢাল মাথায় নিয়ে সার বেঁধে বসে থাকেন পুরুষরা। তার উপর আছড়ে পড়ে মেয়েদের লাঠির ঝড়।

রঙপঞ্চমী

মহারাষ্ট্রে এই সময়টা পালন করা হয় ‘রঙপঞ্চমী’ হিসেবে। তার আগের দিন বিকেলে ‘হোলিকা দহন’ দিয়ে উৎসবের শুরু। অশুভকে হারিয়ে শুভ শক্তির সূচনা। পরের দিন রং, জল এসব দিয়ে শুরু হয় হোলি খেলা। স্থানীয়দের ভাষায় যাকে বলে ‘ধুমধাড়াকা’। ‘পুরণ পোলি’ নামে একধরনের স্থানীয় খাবার মহারাষ্ট্রের এ সময়ের বিশেষত্ব। সেই প্রসাদ দেবতার পায়ে অর্পণ করেই শেষ হয় অনুষ্ঠানের।

মহল্লা উৎসব

পাঞ্জাবে আবার এই সময়ে পালিত হয় ‘হলা মহল্লা’ উৎসব। হোলির ঠিক আগের দিন বীরত্বের উদযাপন হয় এই উৎসবের মাধ্যমে। মার্শাল আর্ট, ঘোড়ায় চড়া – এসবের মধ্য দিয়ে শিখ যোদ্ধাদের নানাভাবে শ্রদ্ধা জানানো হয় এদিন। পরে নাচ গান ও রঙে পালন করা হয় হোলির উৎসব।

শিগমো
গোয়া সারা বছরই রঙিন। তবে গোয়ায় রঙের উৎসবটি পরিচিত ‘শিগমো’ নামে। রং খেলার পাশাপাশি লোকগান ও পথনৃত্যের মাধ্যমে এই উৎসব উদযাপন করেন গোয়ানিজরা।

এছাড়া কেরালায় হোলি উৎসব ‘মঞ্জল কুলি’ বা ‘উকুলি’ নামে পরিচিত। সমস্ত রাজ্য জুড়ে দোল উৎসবের জনপ্রিয়তা বিশাল না হলেও কোঙ্কানি এবং কুদুম্বি সম্প্রদায়ের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। অন্যদিকে উদয়পুরে রাজকীয়ভাবে পালন করা হয় এই হোলির উৎসব। মেওয়ারের রাজ পরিবার বড় করে পালন করে এই উৎসব। উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুন অঞ্চলে পালন করা হয় ‘কুমায়ুনি হোলি’। এর সঙ্গে মূলত জড়িয়ে আছে কৃষিজীবি মানুষের উৎসব। নতুন বীজ বপনের ঋতুকে উদযাপন করেন এখানকার মানুষ।

Trending

Most Popular


Would you like to receive notifications on latest updates? No Yes