বিয়ের জন্য পছন্দের তালিকায় থাকতে পারে এই ২০ রকম বেনারসি

jamdani

সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেনারসিতেও এসেছে অভিনবত্ব। সন্ধের পার্টি থেকে শুরু করে সকালের পুজো— বেনারসির কদর এখন সর্বত্র। আর বেনারসি মানেই শিল্পকর্মে পরিপূর্ণ একটি কাপড়। শাড়ির ধরণ, কারুকার্য এবং নকশার ভিন্নতায় এর নাম পরিবর্তিত হয়, যেমন— সিল্ক, টিস্যু, জুট কাতান, সিলভার বেনারসি, জংলা, স্বর্ণকাতান, চান্দেরি, বেল স্যাটিন, অরগ্যাঞ্জাপাটোলা ইত্যাদি।

শিফন বা জর্জেট বেনারসিঃ হালকা অথচ সুন্দর কিছু পরতে চাইলে দেখতে পারেন শিফন বা জর্জেট বেনারসি। ইভিনিং পার্টি, রিসেপশন, অফিস মিটিং, অন্নপ্রাশন বা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দারুণ মানাবে এই বেনারসি 

থ্রি-ডি বেনারসিঃ থ্রি-ডি বেনারসি বেশ ইউনিক। থ্রি-ডাইমেনশনাল বা ত্রিমাত্রিক নকশা থাকে এই বেনারসিতে। রঙিন এই শাড়িতে বিভিন্ন শেডে থ্রি-ডি এফেক্ট দেওয়া হয়।

টিস্যু বেনারসিঃ জমকালো সাজ চাইলে প্রযোজ্য জরির ব্রোকেড কারুকার্যে ভরা হালকা ওজনের টিস্যু বেনারসি।

কটন বেনারসিঃ সুতির উপর বেনারসি কারুকার্যে ভরা শাড়িই হল কটন বেনারসিখুবই লাইট ওয়েট কিন্তু অপূর্ব দেখতে এই বেনারসিগুলো সকাল বা দুপুরের কোনও অনুষ্ঠান, কলেজ সেমিনার বা পুজোতে পরা যেতে পারে।   

ঢাকাই বেনারসিঃ ঢাকাই জামদানি আর বেনারসির সংমিশ্রণে বানানো হয় ঢাকাই বেনারসি শাড়ি এই বেনারসিতে জামদানি কাজের পাশাপাশি আঁচল এবং পাড়ে থাকে বেনারসি ফ্যাব্রিকের নকশা।

কাতান বেনারসিঃ কাতান বেনারসি হল এক ধরণের বিশেষ সুতোর বুনন। দুই ধরণের উচ্চ মানের সিল্ক সুতোকে মিশিয়ে কাতান তৈরি হয়। এই বেনারসির ওজন বেশ হালকা, তবে এর জৌলুস এবং রঙ-রূপে আপনি মুগ্ধ হবেন।

অরগ্যাঞ্জা বেনারসিঃ এটি একপ্রকার ব্রোকেড বেনারসি। হাল্কা ওজনের এই শাড়ি তুলনামূলক পাতলা হয়। যে কোনও অনুষ্ঠানে পরলে সহজেই নজর কাড়বে এই বেনারসি।

 

পশ্চিমা বেনারসিঃ পশ্চিমা বেনারসি বোনা হয় খুবই উন্নতমানের সিল্কেবলা হয়, হিমালয়ের পার্বত্য উপত্যকায় প্রতিপালিত হওয়া বিশেষ ছাগলের লোম থেকে তৈরি হয় এই সিল্ক। অরগ্যাঞ্জার মতো এই বেনারসিও পাতলা এবং কম ওজনের হয়।

কারোয়া বেনারসিঃ কারোয়া বেনারসির বিশেষত্ব হল এমব্রয়ডারির কাজ। এই বেনারসি দেখতেও কিছুটা ভিন্ন। কারোয়ার মূল বৈশিষ্ট্য হল এর ফ্লোরাল মোটিফ।

জারদৌসি বেনারসিঃ জারদৌসি বেনারসিতে নকশার উপর মেটালিক বা ধাতব সুতোর কাজ থাকে। রিসেপশন বা যে কোনও অনুষ্ঠানে ফ্যাশনেবল লুক চাইলে এই বেনারসি ট্রাই করা যেতেই পারে।

রেট্রো বেনারসিঃ এই বেনারসির রূপই আলাদা। নানারকম সুতো কাজ থাকে শাড়ি জুড়ে। এর পাড় হয় সিলভার বা গোল্ডেন জরির।

মাদুরাই বেনারসিঃ মাদুরাই সিল্ক দিয়ে তৈরি হল এই বেনারসি। শাড়ি জুড়ে দেখা যায় দক্ষিণ ভারতের শিল্পকর্ম। এই বেনারসির বিশেষত্ব হল ঘন সুতোর কারুকার্যে ফ্লোরাল বা ফিগার মোটিফ। এই বেনারসির পাড় অপেক্ষাকৃত কম চওড়া হয়।

ঘিচা বেনারসিঃ জমকালো এই শাড়িতে থাকে খুব ঘন সোনালি জরির কাজতবে মজার ব্যাপার হল এই বেনারসি হয় হালকা ওজনের। রাজকীয় লুক পেতে বিয়ে বা সন্ধ্যার অনুষ্ঠানে পরতে পারেন ঘিচা বেনারসি

সিলভার বেনারসিঃ রুপোলি জরির নকশায় সাজানো হয় এই বেনারসি। এক্ষেত্রে খুব সূক্ষ্মভাবে কাপড়ের বুনন হয়। আর যদি হয় রুপোর জল করা সুতোর কাজ, তাহলে সেই সুতোকে প্রথমে নরম করে নিতে হয়। তারপর শুরু হয় বুনন।

রয়্যাল বেনারসিঃ বিয়েতে রাজকীয় লুক পেতে পরতে পারেন এক্সক্লুসিভ রয়্যাল বেনারসি জমকালো এই শাড়িতে মুঘল যুগের ওয়াল পেন্টিং দেখে নকশা করা হয়লাইট ওয়েট এই বেনারসিতে থাকে ঘন কারুকার্যের বাহার। তাই আভিজাত্যপূর্ণ লুক পেতে অবশ্যই ট্রাই করুন এই রয়্যাল বেনারসি।

পাশমিনা বেনারসিঃ নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এর সঙ্গে কাশ্মীরের যোগসূত্র রয়েছে। ঠিক ধরেছেন, কাশ্মীরি নকশায় সুসজ্জিত হয় এই বেনারসি। শাড়ি জুড়ে থাকে কাশ্মীরি নকশার টেক্সচার, তার উপরে থাকে বেনারসি কাজ।

স্বর্ণসুতো বেনারসিঃ সোনার জল করা সুতোর সূক্ষ্ম কারুকার্য থাকে স্বর্ণসুতো বেনারসিতে। অন্যান্য বেনারসির তুলনায় এই শাড়ি দামেও অপেক্ষাকৃত বেশি হয়, তবে নকশাও থাকে দেখার মতো। বেনারসের হাতে গোনা কয়েকজন কারিগরই জানেন এমন বিশেষ সুতোর বুনন কৌশল

ঘারচোলা বেনারসিঃ গুজরাটের ঐতিহ্য বলা চলে এই বেনারসিকে। রঙিন সুতো এবং জরির কাজে ভরানো হয় এই বেনারসি। এই শাড়ি তৈরি করতে সময় লাগে অনেক। আর সূক্ষ্ম কাজ থাকায় দামও হয় বেশি।

কাঞ্জিরোসিঃ কাঞ্জিভরম সিল্কের উপরে বেনারসির বাহার এই শাড়ির বিশেষত্ব। নিজেকে একটু ভিন্ন রূপ দিতে কাঞ্জিরোসির জুরি মেলা ভার। লাইট ওয়েট এই শাড়ি যেকোনও অনুষ্ঠানে পরলে সকলের নজর কাড়বেই।

পাটোলা বেনারসিঃ সিল্কের উপর ইক্কত প্রিন্ট পাটোলা বেনারসির বিশেষত্ব। এই বেনারসির নকশায় থাকে খুব সূক্ষ্ম জরির কাজ

 

*আরও অনেক ধরণের বেনারসি রয়েছে। হাজারো বৈচিত্রময় বেনারসি চাক্ষুষ করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন কেয়া শেঠ এক্সক্লুসিভ, কালীঘাট থেকে। আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানে চলবে বেনারসি কার্নিভাল, যা শুরু হয়েছে ১৮ নভেম্বর থেকেমোট ৬০ রকমের এবং ৩৫ হাজার বেনারসি শাড়ির কালেকশন থাকবে সেখানে।  চাইলে সংগ্রহও করতে পারবেন। তবে শুধু সংগ্রহই নয়, বেনারসি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যও জানতে পারবেন কার্নিভালে। বলে রাখি, ওই কার্নিভালে শুধুমাত্র বেনারসি শাড়ি নয়, ছেলে-মেয়ে উভয়ের জন্যই বেনারসির ওয়েস্টার্ন, এথনিক এবং ইন্দো-ওয়েস্টার্ন পোশাকের সম্ভার থাকবে সেই কার্নিভালে।  

 

Trending


Would you like to receive notifications on latest updates? No Yes