jamdani

রূপকথার বাঁশিওয়ালা আছে বাস্তবেও!

সেই গল্পটা নিশ্চয়ই শুনেছেন, এক ছিল বাঁশিওয়ালা। তার বাঁশির সুরে শহরের সমস্ত ইঁদুরকে মেরে ফেলে শহরকে বাঁচিয়েছিল ইঁদুরের উৎপাত থেকে। গ্রিমদের উপকথা হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার সেই বিখ্যাত বাঁশিওয়ালার কথাই বলা হচ্ছে।

তবে অনেক অনেক উপকথা হিসেবে প্রচলিত হলেও এই ঘটনার সত্যতা আছে কিনা তা নিয়ে প্রচুর ধারণা আছে। তবে কাহিনী সত্য হোক বা না হোক, মাইকেল বয়ার গত ২৬ বছর ধরে অভিনয়ের মাধ্যমে হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালার চরিত্রকে প্রাণদান করে চলেছেন।

তিনি প্রতিদিনই উজ্জ্বল রঙবেরঙের পোশাকে সেজে বাঁশি হাতে হেঁটে যান জার্মানির ৬০ হাজার বাসিন্দা নিয়ে গড়ে ওঠা হ্যামলিন শহরের মধ্য দিয়ে। যথারীতি পর্যটকদের মধ্যেও হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালাকে ঘিরে কৌতূহলের অন্ত নেই। ভুলবশত কেউ তাকে মনে করেন রবিন হুড অথবা কোনো সুপারহিরো।

বেশিরভাগই মানুষই অল্প সময়ে তাকে চিনে ফেলেন। স্বাভাবিক ভাবেই পর্যটকদের কাছে ইনস্টাগ্রামের ছবি তোলার জন্য আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন মাইকেল। অনেকে তার রামধনু রঙের পোশাক দেখে তাকে সমলিঙ্গ আন্দোলনের সহযোদ্ধাও মনে করেন।

তবে গ্রিম ভাইদের মূল কাহিনীতে বাঁশিওয়ালাকে এক ভৌতিক এবং রহস্যজনক চরিত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে। গল্পের কাহিনী অনুযায়ী হ্যামলিনের বাঁশিওয়ালা উপযুক্ত পারিশ্রমিক না পেয়ে হ্যামলিনের শিশুদের তার বাঁশির মায়ায় মুগ্ধ করে উধাও হয়েছিলেন।

প্রসিদ্ধ ইংরাজি সাহিত্যের কবি রবার্ট ব্রাউনিং ও এই উপকথার চরিত্রটিকে নিয়ে একটি কবিতা রচনা করেন। বাঁশিওয়ালার সাজে সজ্জিত বয়ার দর্শকদের হ্যামলিন শহর ঘুরিয়ে দেখানোর সময়ে সারি সারি কাঠের বাড়ি, বিয়ের কেক সদৃশ বাড়ি এবং ষোড়শ শতাব্দীর রেনেসাঁ আর্কিটেকচারের নিদর্শন বিস্তারিত বর্ণনা করেন। হ্যামলিন শহরের পর্যটন শিল্পের অধিকাংশই এই বাঁশিওয়ালার রূপকথার ইঁদুর, বাঁশি, পোশাক ইত্যাদির ওপর নির্ভর। স্থানীয় রেস্তোরাঁয় ইঁদুরের লেজের চিহ্ন সম্বলিত থালা, বেকারিতে ইঁদুর আকৃতির পাঁউরুটি, স্যুভেনিরের দোকানগুলোতে পাইপার টিশার্ট, মগ, ইঁদুর ইত্যাদি দেখতে ও কিনতে পারেন পর্যটকরা।

এছাড়াও হ্যামলিনের জাদুঘরে একটি লাইট এন্ড সাউন্ড উপস্থাপনা হয়। গ্রীষ্মকালে খোলা আকাশের নীচে অভিনেতারা সেই বিখ্যাত গল্পকে নাটকের মাধ্যমে উপস্থাপিত করেন। শোনা যায় যে, ১৬০২ সালে এমন এক ঘটনা সত্যিই ঘটেছিল এবং এই শহরের অসংখ্য শিশু চিরতরে নিখোঁজ হয়ে গেছিলো। তারও আগে ১২৮৪ সালেও এমন শিশু নিখোঁজ হবার ঘটনা ঘটে। তবে সরকার এই ঘটনা আড়ালেই রাখতে চান অজানা কারণে।

এর কারণ কি সত্যিই এমন কোনো বাঁশিওয়ালার আগমন? নাকি আরো গভীর কিছু যা প্রকাশে বিপদের সম্ভাবনা অনেক বেশি? উত্তর অজানা। তবে একথা ঠিক যে উপকথাকে ঘিরে অসংখ্য সাহিত্য সৃষ্টি তা সম্পূর্ণ কাল্পনিক নয়, বরং হ্যামলিন বা জার্মানিতে অনেকবার নেমে এসেছে এই বাঁশির সুর অভিশাপ হিসেবে।

Trending

Most Popular


Would you like to receive notifications on latest updates? No Yes