রুক্মিণী থেকে কোয়েল। বাবার আদুরে মেয়ে থেকে ইন্ডাস্ট্রির ‘মিতিন মাসি’। বাঙালি পরিবারের মেয়ে থেকে পাঞ্জাবি পরিবারের বউ। রিল টু রিয়েল- সব নিয়ে কোয়েল মল্লিকের মুখােমুখি মানসী চ্যাটার্জি।
সতেরাে বছর আগের ইন্ডাস্ট্রি এখন অনেক ওয়াইডার। এখন টলিউড অনেক বেশি টেকনিক্যালি সাউন্ড। লাইট–ক্যামেরার কাজ, এডিটিং এককথায় দারুণ। আমার মনে আছে, আগে ফিল্মে রিলের খরচ অনেক বেশি ছিল, তাই একটু-আধটু ভুল থেকে গেলে তা এক্সচেঞ্জ করা হত না। কিন্তু এখন ডিজিটালাইজড হওয়ায়, সেই সুবিধাগুলি পাওয়া যায়। এছাড়া এখন কস্টিউমের জন্য স্টাইলিস্ট ও ডিজাইনাররা আছেন। কিন্তু দ্যাট পয়েন্ট অফ টাইম আমাদের। জাস্ট ড্রেসাররা থাকতেন। মার্কেটে যা পাওয়া যেত তাই পরতাম। ফলে আজকাল নায়ক-নায়িকার লুকেও বদল এসেছে। আর অবশ্যই ছবির কনটেন্টে হিউজ চেঞ্জ এসেছে। এখন ছবির যে সব সাবজেক্ট ভাবা হচ্ছে, ষােলাে বছর আগে তা ভাবাই যেত না। তাছাড়া যেটা না বললেই নয়, এখনকার জেনারেশন অনেক বেশি ম্যাচিওরড। ক্যামেরা লুক, মেকআপ, ফ্যাশন সম্পর্কে তারা অনেক বেশি ওয়াকিবহাল, যা আমি একদমই ছিলাম না।
সেটা তাে আমার থেকে দর্শকরা ভালাে বলতে পারবেন। তবে আমি কিনা, সেটা এখনও সেভাবে ভেবে দেখিনি। বরং আমার মনে হয়, যাঁরা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন তারা ভীষণ ভালাে কাজ করছেন।
আই অ্যাম সেল্ফ ক্রিটিক। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে অনেক কিছু মনে হয়। যেমন কিছু কিছু । সিন দেখলে মনে হয়, চুলটা এমন করে কেন বেঁধে ছিলাম! ইস, মেকআপটা অন্যভাবে করলে হয়তাে আরও বেশি ভালাে লাগত! সাে অ্যাজ আ সেল্ফ ক্রিটিক্স, স্কোপ অফ ইমপ্রুভমেন্টের জায়গাটা থেকেই যাবে। তবে সেই সময়ের জন্য আমার নিজেকে খুব ভালাে লেগেছিল। তাছাড়া তখন মেকআপ সম্পর্কে অত বুঝতামও না। সাজার জিনিস বলতে আমার ছিল কাজল আর লিপস্টিক, সেখানে এত কিছু দিয়ে সাজতে পেরে আমি খুশি হয়ে গিয়েছিলাম।
আমি নিজেই এখন ভাবি কী করে পারলাম! আসলে সিনেমা আর সাইকোলজি— দুটির প্রতি আমার ভীষণ ভালােবাসা ছিল বলেই হয়তাে পেরেছিলাম। মনে আছে, মেকআপ রুমে বসে আমি সাইকোলজির নােটস পড়তাম। সারাদিন শুটিং করে বাড়ি ফিরে ল্যাবের খাতা নিয়ে। বসেছি। আবার কলেজের অফ পিরিয়ডে সবাই যখন গল্প করত, তখন আমি সিনেমার ডায়ালগ মুখস্থ করতাম।
না, একদমই নয়। আমার কলেজ অ্যাটেনডেন্সের বিষয় ভীষণ স্ট্রিক। প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের ল্যাব বুক যে দিন সাবমিশন করার ডেট থাকত সেদিনই করত হত, আদারওয়াইজ ডিসকোয়ালিফাই হয়ে যেত। বুঝতেই পারছ, নাে একস্ট্রা সুবিধা। বাকি আর পাঁচটা ছাত্রীর মতাে আমাকেও ট্রিট করা হত। তাে আমাকে ছুটির দিনগুলােতেই শু্যটিং রাখতে হত।
আমি মানুষের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখি। তাহলেই মানুষটাকে রিড করা যায়।
অবশ্যই একজন সাইকোলজিস্ট।
আমি আর বাবা খুব মজা করি এই ব্যাপারটা নিয়ে। বেশ ইন্টারেস্টিং ইন্টারেস্টিং মিম বানানাে হয় কিন্তু। তবে বাবা যেহেতু সােশ্যাল মিডিয়ায় এক্কেবারেই নেই, তাই আমি যখন এই মিমগুলাে পাই তখন বাবার সঙ্গে শেয়ার করি। আর দুজনে মিলে হাে হাে করে হাসি।
হুম, অনেকবার। একটা ঘটনা বলি- তখন কলেজে পড়ি বােধ হয়। একদিন জেদ ধরলাম নিজে গাড়ি চালিয়ে নিউমার্কেট যাব। বাবা কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না। ভয় পাচ্ছেন, যদি অ্যাক্সিডেন্ট হয়। এদিকে আমি নাছােড়বান্দা। বললাম, “বাবা, আমি তােমার কথা শুনব না, আর তুমি জানাে , তােমার কথা না শুনলে আমার কষ্ট হয়। বাবা আমার একফোঁটা কষ্টও সহ্য করতে পারেন । অতঃপর রাজি হতেই হল।
কখনও নয়। তবে দোলের দিন আমি বাবাকে একদম বিশ্বাস করি না। আমার রঙে ভীষণ ভয়। প্রত্যেক বছর বাবাকে বলতাম, “আমাকে কোথাও লুকিয়ে দাও, যাতে দাদা-দিদিরা খুঁজে না পায়। তিনি আমাকে লুকিয়ে দিতেন ঠিকই, কিন্তু সবাইকে গিয়ে বলে আসতেন আমি কোথায় লুকিয়ে আছি!
বাবা ঘুড়ি ওড়াতে ভালােবাসেন। তবে আমাদের দুজনের ভীষণ প্রিয় বৃষ্টি। আর বৃষ্টি মানেই খিচুড়ি আর বেগুনভাজা। সঙ্গে কবিতার বই। বাবা খুব সুন্দর কবিতাপাঠ করেন।
হ্যাঁ এটা ঠিক, বাকি বন্ধুবান্ধবীদের বাবার মতাে আমার বাবা আমায় কখনও চিড়িয়াখানা বা প্ল্যানেটরিয়ামে নিয়ে যেতে পারেননি। তবে তার জন্য আমার থেকে বাবা বেশি কষ্ট পেতেন। ছােটোবেলায় প্রায়ই বলতেন, “তাের জন্য নতুন বাবা নিয়ে আসব। সে তােকে ফুচকা খেতে নিয়ে যাবে। বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাবে। আর এই কথাটা শুনেই আমি কান্না জুড়ে দিতাম। বলতাম, “না, আমার তােমাকেই চাই।আসলে এখন বুঝি, বাবা বুদ্ধি করে জেনে নিতেন, বাবাকে কাছে না পাওয়ার ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে কিনা। তবে মাঝে মাঝে আমরা ভিক্টোরিয়া মেমােরিয়ালে যেতাম। বাবা বলতেন, “আমি গাড়িতে বসছি, তুই সামনে থেকে ঘুরে আয়। বেশিদূর যাস না। আর ভয় পাস না, আমি এখান থেকে তােকে দেখছি, আমি আছি।
আমি বাবার সঙ্গে হয়ত বেশি সময় কাটাতে পারিনি ঠিকই, তবে যতটুকু কাটিয়েছি সেইটুকুই কোয়ালিটি টাইম। তাছাড়া কলটাইম দেরিতে থাকলে বাবা আমাকে স্কুলে ছেড়ে দিয়ে আসতেন। বাড়িতে ফিরে আমার সব অভিযােগ শুনতেন, আবদার মেটাতেন, গল্প শােনাতেন। আবার গিনিপিগও হতেন মাঝে মাঝে (হাসি)।
আসলে ইলেভেন-টুয়েলভে আমার হােম সায়েন্স ছিল। পরীক্ষার আগে বাড়িতে রান্না প্র্যাকটিস করতাম। আর সেই রান্নাগুলাে খাওয়াতাম বাবাকে। একবার একটা খাবার মুখে তােলার পর, বাবার সেই এক্সপ্রেশন ‘ওরে এটা কী করেছিস? নাম না বললে বুঝতামই না এটা মাছ!
শ্বশুরবাড়িতে এসে সেখানে তাদের খাওয়ার অভ্যাস বা রিয়ালের সঙ্গে নিজেকে মানাতে কোনও অসুবিধা হয়নি?
এক্কেবারেই নয়। কারণ রাজমা চাওয়াল টু কলাইয়ের ডাল, আলুপােস্ত- আমার শ্বশুরবাড়িতে দু’ধরনের খাবারই তৈরি হয়। আর সেটা আমরা সবাই মিলে খুব মজা করে খাই।
টাচউড, আমার শাশুড়ির সঙ্গে আমার সম্পর্ক একেবারে বন্ধুর মতাে। ওনারা আমাকে খুব ভালােবাসেন।
জাস্ট কোনও ম্যাটার করে না।
সন্দীপ মুখোপাধ্যায় - “নাম কী? থাকো কোথায়? কোন ক্লাস অবধি... Read More
এদেশে সোনাকে স্থিতি এবং ভাগ্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।...
আমরা সবাই জানি যে ত্রিদেব বলতে ব্রহ্মাণ্ডের তিন প্রধান স্তম্ভকে...
লিপস্টিক আমার কাছে লিপস্টিক নয়। লিপস্টিক আমার কাছে প্রতীক। রং...
নাতাশা স্নান সেরে এসছে। সারাটা ঘরই এখন গন্ধস্নান করছে। একই...
পুলিশের উর্দিটা তখনও গা থেকে খুলিনি, সুসময়ী বলল, “তােমার জন্য...
শাে তখন জমে উঠেছে। শীতের সন্ধে। গায়ে ছিল হালকা জ্যাকেট।...
চা আর প্রজাপতি বিস্কুট। খাবার মধ্যে এই। কিন্তু কথা ছিল...
সকাল বেলাটা আজকাল বিজনের বেশ সমস্যার। থিতু হয়ে প্রভাত উপভােগ...
রিশপের ছবিগুলাে সব ফেসবুকে আপলােড করার পর কম্পিউটারের সামনে থেকে...
লােকে ‘ব্যোমকেশ’ নামে ডাকেন। নতুন নামকরণ হয়েছে ‘সােনা দা। এদিকে...