jamdani

বসন্তযাপন

মানস সরকার

কান খাড়া করে আর একবার শুনল মেহুলিকী ভালােই না লাগে! সাতসকালে কোকিলের ডাক মানেই সারা শরীর আর জুড়ে সত্যিকারের একটা বসন্তভাব ছড়িয়ে যায়আবহাওয়ায় তাে বসন্ত নেই বললেই চলেতার উপর যদি এই মেগাসিটির ফ্ল্যাটবাড়িতে বাস হয়এই জন্যই নিজের চন্দননগর শহর এত মনে পড়েজীবনের আঠারােটা বছর সে সেই শহরে দাদু-ঠাকুমাজেঠা আর জেঠির আদর খেয়েছেযদিও সে শহরও পুরাে মাত্রায় স্মার্ট হবার পথেঅবশ্য খান দুয়েক মল, আধুনিক রেস্তোরাঁ, শয়ে-শয়ে গাড়ি আর চার হাত অন্তর উঁচু উঁচু ফ্ল্যাটবাড়ি থাকলে যদি স্মার্ট বলা যায় তবেইতবু সে সব থেকেও সেখানে এখনও সবুজের ছোঁয়া আছে, আছে কিছু পুকুর। পুরনাে বাড়ি আর দারুণ কিছু মানুষসঙ্গে বসন্ত আর গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মন আকুল করা কোকিলের ডাক। 

জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে ডাক্তারিতে চান্স পেয়েই মেলি বুঝে গেল সব ওর জীবনে দীর্ঘস্থায়ী নয়প্রথমত কলকাতার প্রথম সারির একটা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজে পেয়েছে। আর সে কলেজে ক্লাসের রুটিনকে মানিয়ে নিতে গেলে নিজের শহরকে ছাড়তে হবে। আবার হােস্টেলে মানিয়ে নিতেও সমস্যাফলে বাবা-মা’র সঙ্গে তড়িঘড়ি শহর কলকাতার এই ফ্ল্যাটেবাবার অফিস যেতেও সুবিধে হয়ে গেলসবাই খুব জোর দিয়ে বাবাকে বলেছিল মেহুলির কেরিয়ারের কথাবাবার নিজেরও ইচ্ছা ছিল কলকাতায় একটা ফ্ল্যাট কেনার। ও ডাক্তারিতে চান্স পাওয়ায় বাবার ইচ্ছেটাও পূরণ হল। শুধু দাদুকে আর ওখানে স্কুলের বন্ধুদের ছেড়ে আসতে খুব কষ্ট হয়েছিল। 

ফাইনাল শিফট হওয়ার আগের দিন ক্যাম্পচেয়ারে বসেছিল দাদুপুরনাে বাড়ির বারান্দাসার সার কাঠের জানলাসে জানলা দিয়ে সন্ধের তারা দেখা যাচ্ছে। দাদু বলেছিল, মন খারাপ করছিস কেন! আমার বাতটা ইদানিং একটু বাড়ছে, জানিসই তােতুই ডাক্তারি শেষ করে ফিরে এলে আমার রােগটা ঝট করে সেরে যাবে। 

মেহুলি বলেছিল, সে তাে সারবেই। মন খারাপটা সে জন্য করছি না গােভাবছি, সে শহরে গিয়ে সঙ্গী সাথি পাবাে নাস্পেশালি, তােমার বা এখানকার বন্ধুদের মতাে। 

– “পাবি, পাবিতাের সঙ্গে সবাই যেচে বন্ধুত্ব করবেআর তুই তাে আবার বকরং বকরং না করে থাকতেই পারিস না।হাসলেও দাদুর গলায় বিষণ্ণতা ছিল, বুঝতে পেরেছিল মেহুলি”। 

সেপ্টেম্বরে ক্লাস শুরু হয়ে জানুয়ারি পর্যন্ত যথেষ্টই ব্যস্ততা ছিলঅ্যানাটমি, বায়ােকেমেন্ত্রি বা ফিজিওলজির লেকচার বা ল্যাবে ডেডবডির প্রিলিমিনারি ডিসেকশন মিলিয়ে কখন যেন মেডিক্যালের পড়াশােনার বৃত্তে এক ঝটকায় ঢুকে পড়েছিল। 

মাস দেড়েক পরেই ফলে গিয়েছিল দাদুর কথাক্লাস শেষ করে বাসে ফিরছিল মেলিমুখ চেনা থাকলেও ক্লাসে বা কলেজে পরিচয় এগােয়নিএবার পুরােদস্তুর আলাপ হয়েছিল বেদান্তর সঙ্গেএফ এম চ্যানেল বরাবরই খুব প্রিয়। কানে হেডফোন গুঁজে মােবাইলে তাই খুব মন দিয়ে শুনছিল আর তাকিয়েছিল জানলা দিয়ে বাইরেসন্ধে নেমে আসছিল কলকাতার বুকে ধীর গতিতেকিন্তু মানুষজন এখানে সদা চঞ্চলপাশের ভদ্রমহিলা উঠে যেতেই পাশে বসেছিল কোনও ইয়ং ছেলেএকঝলক তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েই মেহুলির মনে হয়েছিল ছেলেটা তাে ওর ক্লাসেরইভুল হচ্ছে কি না দেখার জন্য আর একবার তাকিয়েছিল। আর তাতেও খােলা হাসি দেখতে পেয়েছিল সে মুখে‘জানি আমাদের একই ক্লাসবললে হ্যাঁ – বাচকে ঘাড় নেড়েছিল মেহুলি। 

আমি বেদান্ত, বেদান্ত ভট্টাচার্য’। 

মেহুলি... রায়, এগােতে হয়েছিল ওকেওএরপর পঁয়তাল্লিশ মিনিটের যাত্রায় ফোন নম্বর, হােয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকে আছে কি নাপরিচয়পর্ব তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়েছিলযেটা অবাক করেছিল মেহুলিকে সেটা হল বেদান্ত যখন একই স্টপের টিকিট কাটল। 

– ‘তুই কোথায় থাকিস রে?কৌতুহল কিছুতেই চাপতে পারেনি মেহুলি। 

যেন মজা পেয়েছিল বেদান্ত। হাসির ছোঁয়া লাগিয়ে বলেছিল, তুই যেখানে থাকিস সেখানেই। 

তার মানে আমাদের ফেজেই? কোন ব্লক বল তাে?” 

– ‘বিআর তাের এ। জানি। 

মানে

– “কিছুই নাতােকে আগে থেকেই চিনি।’ 

লক্ষ করেছিল মেহুলি, হাসলে বেদান্তর দু’গালে বেশ গভীর টোল পরে। বাড়তি বৈশিষ্ট্য। চশমা, বাঁ-দিকে সিঁথি করা ব্যক্তিত্বে ওটাই চোখ টানছিলবাড়তি কিছু যেন মুখে। কাটা কাটা উচ্চারণতবে বেশ শান্তনিজে অনেকটাই চঞ্চলএকটু ভেবে বলেছিল, , আমি দেখিনি কখনওআসলে এখানে আমার সঙ্গে সেভাবে কারওর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠেনি। 

কোনও ব্যাপারই নয়আলাপ হয়েই যাবেআশ্বাসের স্বরে বলেছিল বেদান্ত।’ 

 

বন্ধুত্ব এরপর বেশ দ্রুততালেই এগিয়েছে। অন্য ব্লকের প্রথমা আর শুভ্রজিৎএর সঙ্গেও আলাপ করিয়ে দিয়েছিল বেদান্তইতবে ওরা জেনারেল স্ট্রিমপ্রথমার ইংলিশ আর শুভ্রজিৎ-এর ফিজিক্স অনার্সওরা তিনজনেই শহর কলকাতার ছেলেমেয়ে। কলকাতার কোনও গল্প যখন আড্ডায় শুনেছে, মনেহয়েছে একটু বেশিই আদিখ্যেতা করছেবিশেষত বেদান্তটাওর মতে টালিগঞ্জের ‘মিট অ্যান্ড ফিল’-যে চিকেন স্টেক সার্ভ করা হয়, তা নিউ ইয়র্কেও পাওয়া যাবে না। কলেজ থেকে ফেরার পথে বেশ কয়েকবার দেখেছে রেস্তোরাঁটা মেহুলিখাওয়ার সুযােগ হয়নি, কিন্তু নিউ ইয়র্কের সঙ্গে তুলনা টানাটা কোথাও চূড়ান্ত বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। 

মনে পড়ে গেছে, চন্দননগরের কল্যাণদার কেবিনের কথা। ম্যাথ’ টিউশন পড়ে ফেরত আসার সময় বন্ধুরা মিলে ভিড় ঠেলে সামনের বেঞ্চে বসে চিকেন স্টু আর ব্রেড খেত। আর চার্চ রােডে বুলাইদার ফিশ ফ্রাই আর চিকেন পকোড়া যাকে বলে লা-জবাব। যতবার আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে এসেছে, খাওয়ানাে হয়েছে এই ফ্রাই বা পকোড়া। জলভরা মিষ্টির সঙ্গে একইভাবে এইসব ফুড আইটেমও ভীষণভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বেশ কয়েকবার লেকেও গেছে। মেহুলি। মুগ্ধ হয়ে গেছে। তবুও বার-বার মনে পড়েছে নিজের শহরের স্ট্র্যান্ডের কথা। সন্ধেবেলা যে নদীর ধারে এই স্ট্র্যান্ড বসেনি, সে জানে না, সে শহরের বুকে এক টুকরাে প্যারিস কীভাবে নেমে আসে। 

মেহুলির মনে হয়েছে, অদ্ভুত এই আবেগটা বুঝতে গেলে একটা জায়গার সঙ্গে শিকড়ের যােগ থাকতে হয়ঠিক একই কারণে যেভাবে ও হয়তাে বুঝে উঠতে পারছে না এই শহরকে। 

দু-তিনদিন পর হােয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শহর চন্দননগরের বেশ কয়েকটা ছবি পােস্ট করেছিলশুভ্রজিৎ আর প্রথমা মুগ্ধ হয়ে উচ্ছ্বসিত কমেন্ট করেছিলতুলনামূলকভাবে একটু নীরব ছিল বেদান্তদুর্গাপুজোয় ওরা তিনজন মেহুলিকে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তের ঠাকুর দেখিয়েছিলভালাে লেগেছিল। জগদ্ধাত্রী পুজোয় এরপর মেহুলি ওদের নিয়ে গিয়েছিল চন্দননগরে। ওরা এর আগে কোনওদিনই এখানে আসেনি। শােভাযাত্রা দেখে ওরা তিনজনেই থশুভ্রজিৎ অবাক হয়ে বলেছিল,—এত বড়াে ঠাকুর! লরিতে তােলাটাই তাে শিল্পশুনে বেশ গর্ব হয়েছিলতাহলে এ শহরেও দারুণ কিছু আছেভেবেছিল বেদান্ত কোনও কমেন্ট করবেতা না করে ব্যস্ত ছিল একের পর এক ছবি তােলায়।। 

বাড়ির সবার সঙ্গে ওদের আলাপ করিয়ে দিয়েছিল। চন্দননগরের জলভরা’ খেয়ে শেষে নাকের উপর চশমা তুলে কমেন্ট করেছিল বেদান্ত, সন্দেশের মরুভূমিতে রসের মরুদ্যানকলকাতাতেও খেয়েছিটেস্ট পাইনি। খুশির রেশ বেড়ে গিয়েছিল মেহুলিরদাদু ওকে আড়াল করে বলেছিল, তবে যে বলেছিলি বন্ধু হবে না ওখানে! আর এখন তাে ভুলে যাবি মনে হচ্ছে আমাকে। 

ধ্যাত! কী যে বলাে! তােমাকে নিয়ম করে ফোনটা কে করে

—‘তা করিসতবে তাের এই বন্ধুগুলাে কিন্তু ভালােবেদান্ত ছেলেটা তাে একেবারে অন্যরকমকুঁচকে গিয়েছিল মেহুলির। 

কেমন

খুব গভীরতা আছে ওর মধ্যে”।  

“আমার জেনে কী হবেআমার ক্লাসেই পড়েপড়াশােনায় বেশ ভালােতবে প্রকৃতি-ফকিতি বােঝে না”। 

মােবাইলে অ্যালার্ম ক্লকটা বেজে উঠল। হাত বাড়িয়ে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করল মেহুলিকুহু কুহু’ স্বরে এত সুন্দর ডেকে চলেছে কোকিলটাতবে ঠিক চন্দননগরের মতাে নাকোথায় যেন একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য আছেকাউকে বােঝানাে যাবে নাতবে শুনতে পাচ্ছে এই কত! ভালাে লাগাটা থেকেই যাচ্ছেওর মধ্যেবিছানা থেকে উঠে পড়লনিয়ম করেই এখন ক’দিন সকালে বেরচ্ছেফ্ল্যাট কম্পাউন্ডের যে সুইমিং পুল আছে, তার সামনের জমিতে কয়েকটা ইউক্যালিপ্টাস গাছ পুঁতেছিল ওরা সবাই মিলেপ্রস্তাব দিয়েছিল অবশ্য মেহুলিইকলেজের পরীক্ষা চলছিলমিটে গেছে এখনকিছুদিন অন্তত ঝাড়া হাতপাসব গাছগুলােই বেঁচে গেছেসকালে মর্নিং ওয়াকও হচ্ছে, গাছগুলাের দেখভালও হয়মেহুলি, শুভ্রজিৎ আর প্রথমা শুরুতে যাচ্ছিলদিন দুয়েক হল বেদান্তও যােগ দিয়েছে ওদের সঙ্গে। 

নিজের ঘর থেকে বেরিয়েই চোখাচুখি হল বাবার সঙ্গেবাবা অবশ্য বছর ভর মর্নিং ওয়াকে যায়চন্দননগরেও যেতকম্পাউন্ডের অনেকেই বেরয়তাদের সঙ্গেই চমৎকার দল পাকিয়ে নিয়েছেতবে বাবারা অন্যদিকে যায়ওরা অন্যদিকেওর এখনও একটু সময় লাগবেব্রাশ করে ফ্রেশ হয়ে বের হয় । 

–‘বেশ কিছুদিন হল দাদুকে বােধহয় ফোন করােনিকাল রাতে বলছিলসময় করে করে নিওস্নিকার্সের ফিতে বাঁধতে বাঁধতে বলল বাবা’। 

– “আজই করব। পরীক্ষা ছিল। জানিয়েছিলাম তাে হাতের ঘড়িটায় চোখ রেখে বলল মেহুলি”। 

জানােই তাে, তােমার ব্যাপারে একটু বাড়তি চিন্তা করে’। 

বুঝেছি। মুখ টিপে হেসে ফেলল ও। 

বেরিয়ে আসতেই গা শিরশির করে উঠল মেহুলির। কালকে পড়েছিল একটা লাইট হুডি। ফেরার পথে ঘেমে নেয়ে একসা। তাছাড়া শহর কলকাতায় সকালের এই সময়ে ঠান্ডা শিরশিরানিটাই যেন একমাত্র পাওনা। বেলা বাড়লে বােঝার উপায় নেই বসন্ত না গ্রীষ্ম। তাই আজ কালারড গেঞ্জি আর ট্র্যাকশুটে এল। কোকিলের ডাকটা বন্ধ হয়ে গেছে। মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। ছ’টা কুড়ি। বেশ কিছুটা দেরি করে ফেলেছে। জোরে পা চালাতে হল। নির্দিষ্ট জায়গায় এসে দেখল বেদান্ত, শুভ্রজিৎ আর প্রথমা ইতিমধ্যেই হাজির। 

কী ব্যাপার, আজ একটু লেট মনে হচ্ছেঅ্যালার্ম বাজেনি? অন্যদিন তাে তুইই আগে চলে আসিসচোখ তুলে কথাগুলাে ছুঁড়ে দিল প্রথমা। 

আমি অ্যালার্মে উঠি নাবাব্বা! তাহলে? —কেন, কোকিলের ডাকে।” 

পারিসও তােরা! বঙ্কিমের যুগে বাস করিস নাকি রে?বিরক্ত আর ব্যঙ্গের গলা বেরােয় বেদান্ত। প্রথমা আজকাল মেহুলির পক্ষে রায় দিচ্ছেবলল, ‘অ্যাই, তুই কিছু বুঝিস নেচারের? আগে থাকতাম বাঁশদ্ৰোণীতে। ওখানে শুনতে পেতাম না। বাবা বলছিল ব্যাপারটা বেশ রেয়ার। এখন এখানে আমিও মাঝে মাঝে শুনি আর এনজয় করিমেহুলি বােঝে, এরা যতই বলুক, ওর মতাে সেই বন্ধনটা আছে বলে মনে হয় নাকোকিলের ডাক, বসন্তের ভােরের শিরশিরানি, এই হাওয়াসবকিছু বড় তার নিজের অনুভবএকান্তই নিজের মুখে শুধু বলল, ‘সেই’। 

আচ্ছা, মেহুলি, তদন্ত করে ফেলেছি। সব ঠিক আছে। তাের সন্তানরা সুস্থ আর সতেজ। তাও একবার দেখে নেহাতের মুদ্রা করে যেভাবে বলে সেভাবেই বলল শুভ্রজিৎবেদান্ত’র দিকে তাকাল মেহুলি। মুচকে মুচকে হাসছেএকটু গম্ভীর হয়ে বলল, “সে সব ঠিক আছে। কিন্তু এবার একটু ফেন্স দিয়ে ঘেরার ব্যবস্থা করলে হয়ঠোট উলটে ফেলল প্রথমা, তাহলে তাে সে আবার মিটিং ফিটিং...’। 

না না, এটুকুর জন্য আর মিটিং-এর দরকার হবে বলে মনে হয় না। জোর দিয়ে বলল মেহুলি, আমি দু’একজনের সঙ্গে কথা বলছি। হঠাৎ বেদান্ত বলল, ‘এত করে কী হবে! গােটা শহরটার দূষণ পারসেন্টেজের কোনও হেরফের হবে না।’ 

—“বেদান্ত, চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হােমআয়, আমরা নিজেদের লােকালিটিটা নিয়ে একটু ভাবি আগেআর নিজে মেডিক্যাল পড়ে কথা বলছিস?’’ না বলে পারল না মেহুলি। 

ওকে কুল—“তাছাড়া, আর একটা প্ল্যান আছেসবাই চুপবাকি তিনজনেই ওর দিকে তাকিয়ে রইল উৎসুক চোখেসাসপেন্স আর না বাড়িয়ে মেহুলি বলল, মাসের শেষের দিকে একটা বসন্ত উৎসব পালন করব ভাবছি। ভালাে হবে না? ‘

—“দোল তাে এমনি হবে এখানেশুকনাে গলা বেরিয়ে এল শুভ্রজিৎএর। 

প্রথমা ধমক লাগায়, “উফফ! আগ বাড়িয়ে বলাটা বন্ধ করতারপর মেহুলির দিকে তাকিয়ে বলে, আয়াম সিওর, তুই এসব দোল-টোল নিয়ে বলছিস না। 

‘একেবারেই না। শােন তাহলে, বসন্ত উৎসব মানেই আমরা দোল ভাবি। তা কিন্তু নয়আমার মাসির বাড়ি শান্তিনিকেতনঅনেক বার গেছি ওখানে বছরের বিভিন্ন সময়েওখানে ‘বসন্তযাপনআরও নানাভাবে হয়। এক একটা সপ্তাহে ক্লাসে বা স্কুল বাড়িতে নির্দিষ্ট সিজন ফ্লাওয়ার দিয়ে সাজানাে হয়মেয়েরা মাথায় কোনও নির্দিষ্ট ফুল গুঁজে কলেজে আসেবাইরে বেরিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ফুলভরা প্রকৃতির ছবি আঁকে। ব্যাপারটা দারুণবলার ফাকে ফাকে মেহুলি উত্তেজনা অনুভব করছিল। 

এতক্ষণ বেদান্ত এক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়েছিলইম্পেরিয়াল ব্লু লােয়ার ট্র্যাকশুট আর হােয়াইট গেঞ্জিতে চশমাহীন অ্যাপিয়ারেন্স একেবারে অন্যরকম। মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে বলল, ‘শহর কলকাতায় এ ব্যাপারটা আনা শক্তসিজন ফ্লাওয়ার পাওয়া বেশ শক্ততা ছাড়া…। 

প্রথমা বলল, আমার কিন্তু ব্যাপারটা খুব এক্সাইটিং মনে হচ্ছে। তাের মাথায় নিশ্চয়ই কিছু প্ল্যান আছে

—“সে তাে আছেই, সবার দিকে একবার তাকিয়ে নিল মেহুলি, ‘প্রথমেই বল সবাই রাজি তাে?” 

অল্প ভ্রু কুঁচকে বেদান্ত বলল, তার আগে শুনতে চাইব তুই কী করতে চাইছিস।’ 

– “দ্যাখ, আমাদের একটা কমিউনিটি হল তাে আছেই। ব্যাপারটা খুব সিম্পল রাখতে চাইছিএ মাসের শেষ শনিবার আমরা সমস্ত ব্লকের প্রতিটা ফ্যামিলিকে বিকেল পাঁচটা নাগাদ আসতে বলব হলেযার যার পক্ষে সম্ভব তারা হলুদ ড্রেসে আসবেএখানকারই যাঁরা ভালাে গান। গাইতে পারেন বা আবৃত্তি করেন তাঁরা রিপ্রেজেন্ট করবেনকোনও বাইরের শিল্পী নয়পারফরম্যান্সে বসন্ত থিমটা এলে ভালােঝামেলা আর খরচের মধ্যে আমাদের যেটা আছে, সেটা হল একটু পলাশ ফুলমেহুলি আবারও সবার মুখের দিকে তাকিয়ে নিল। 

প্রথমা উত্তেজনায় টগবগ করছিলবলল, দারুণ হবে কিন্তু ! এই শােন, আমার একটা হলুদ তাঁতের শাড়িও আছে। চুলটা তার আগে পালারে একটু ট্রিম...‘ 

আড়মােড়া ভেঙে বেদান্ত বলল, ‘বােরিং আইডিয়া। আমি এসবের মধ্যে নেই। ‘

শুভ্রজিৎ ওর পিঠে একটা মৃদু চাপড় লাগাল,— ‘ব্যাপারটা কী! তুই তাে সবেতেই থাকিস আমাদের সঙ্গে। 

দ্যাখ, গেঞ্জিটা একটু টেনে নামাল বেদান্ত, প্রথমত, সব শহুরে মানুষের কাছে মেঠো প্রােগ্রাম লঞ্চ বেশ বােগাস ব্যাপারআর দ্বিতীয়ত, আমি ওই দিন থাকছিই নাসুতরাং আমাকে লিস্টের বাইরে রাখ। এ সব বসন্ত পালন-টালন আমি ঠিক বুঝি না। 

নিভে যাচ্ছিল মেহুলি। বলল, তুই সত্যিই থাকবি না?” 

“প্রিপারেশনে আছিপ্রােগ্রামের দিনটায় নেই।”  

– ‘তাের কাজ পােস্টপন করা যাবে না?শুভ্রজিৎএর গলা ঝাঁঝাল হয়ে উঠল। 

চোয়াল শক্ত করল মেহুলি, ‘ছাড়হতেই পারেজোর করিস না’। 

সামনে দিয়ে দু’জন ভদ্রমহিলা কথা বলতে বলতে খুব জোরে হেঁটে চলে গেলপুলের জলটা শান্ত। অস্পষ্ট মানুষের কথা কানে এলেও একবারও কোকিলের ডাক ভেসে এল না। 

প্রথমা বলল, “কিন্তু পলাশ ফুল! ওটা কী করে জোগাড় হবে

শুভ্রজিৎ এবার মৃদু হাসল, ‘কুছ পরােয়া নেহি। দোকানে অর্ডার দিলেই হবে। 

মেহুলির দিকে আলতাে করে তাকিয়ে নিয়ে বেদান্ত বলল, ‘আগে থেকে অর্ডার দে, আর না হলে নিউ মার্কেটে চলে যা। 

থেমে থেমে প্রথমা বলল, “ঠিক কী কী করব বা কেমন করে সেটা বসে ঠিক করে নিলে ভালাে হতাে না একদিন? বা কে ঠিক কী করবেকপালটা রুমাল দিয়ে মুছে নিল মেহুলি, সব ঠিক তাে হয়েই গেল। আজ বিকেলেই কমিউনিটি হলটার ব্যাপারে কথা বলে নিচ্ছিতারপর রােজই কয়েকটা করে ফ্যামিলি মিট করব ব্লক ধরেফুলের ব্যাপারটা কথা বলে রাখুক শুভ্রজিৎ। আর শােন প্রথমা, সব একটু একটু করে নােট করবি তুইকে নাম দিল, কী বিষয়ে বা অ্যাঙ্কার কাকে আগে ডাকবে বা পরে— এরকম। 

– “ওকে। আর বেদান্ত

নিজের মােবাইল বের করে ঘেঁটে চলেছিল বেদান্ত। জবাব দিল না মেহুলিইচ্ছে করছিল না। 

একটু আগেই কলেজ থেকে বেরিয়ে এল আজ মেহুলি। একটু ক্লান্ত। মনটাও খারাপ। বাসে উঠেই জানলার ধারে। কলকাতার বিকেলে হঠাৎই গরমের হলকা। ক্যালেন্ডার যাই-ই বলুক, গ্রীষ্ম চলেই এসেছে। হােয়াটসঅ্যাপ খুলে একবার চেক করল অভ্যাস বশে। না, ফারদার টেক্সট করেনি বেদান্ত। লাস্ট সিন দেখাচ্ছে তিনটে চল্লিশ। এক ঘন্টা তার মানে অন হয়নি। আজ কলেজেও আসেনি। এ ক’মাস একসঙ্গে যাতায়াত করে। আজ প্রথম সঙ্গে নেই। একটু ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল। আলােচনা সেরে চলে যাওয়ার পর সেদিন রাতে ইনবক্সে টেক্সট। করেছিল বেদান্ত। লিখেছিল, ‘প্রােগ্রামে থাকব না। রেগে গেলি?’ ক্যাবলা মাকা হাসি দিয়ে একটা ইমােজি পাঠিয়েও শেষ পর্যন্ত একটা ফিরতি টেক্সট করতে হয়েছিল, ‘আমি বসন্ত ভালােবাসি, তাই সে সিজনকে নিয়ে থাকতে চাই। যে ভালােবাসে না, তাকে কিছু বােঝাতেও চাই না।’ 

অবাক করে আবার একটা মেসেজ ভেসে এসেছিল, আমি তাের সামনে থাকলে তােকে দেখে মনে হয় সব সময় সামার চলছেউত্তর দিয়েছিল, সিজন চেঞ্জ হতেই পারেএকগাদা ইমােজি ভেসে এসেছিলবিস্ময়ের। পার্সোনাল ইনবক্স থেকে বেরিয়ে এসেছিল মেহুলি কথা না বাড়িয়ে’। 

নিজে কথা বলতে পারে অনর্গলকিন্তু সেটা পরিচিত মহলেযতটা সহজে বলেছিল, বাস্তবে দেখা গেল অপরিচিত জায়গা মানুষের কাছে ঠিক কেমনভাবে অ্যাপ্রােচ করলে ব্যাপারটা সঠিক হবে তা বুঝে উঠতে পারছে নাগ্রুপে চ্যাটে এটা নিয়ে একটু দ্বিধা প্রকাশ করেছিল মেহুলি। 

শুভ্রজিৎ আর প্রথমা উপদেশের বন্যা বইয়ে দিয়েছিলশুভ্রজিৎ বলেছিল, চল, একটা লিফলেট বানাইসব নিয়ম কানুন লিখে দেব তাতেপ্রথমা লিখেছিল, বসন্ত উৎসব পালন করবআর কমিউনিটির সিনিয়রদের কাছে জিনসটপ পরে না গিয়ে, মনে হয় অন্তত শালােয়ারে যাওয়া উচিত। কী বলিস তােরা?শুভ্রজিৎ লিখেছিল, তাহলে কি আমি পাঞ্জাবিপাজামা!মন বলছিল, বেদান্ত কী বলেমিনিট পনেরাে পর ওর কমেন্ট ভেসে এসেছিল এবং ইউনিক বেদান্তীয় সুলভ, ‘এ সব নিয়ে ভাবিস না মেহুলি। আসলে তুই যেরকম সেভাবেই সবার কাছে যা। যা ভাবছিস, সেটাই পরিষ্কার করে বল। 

বুকের ভার নিমেষেই উধাও হয়ে গিয়েছিল। আগেপিছনে না ভেবে প্রস্তাব দিয়েছিল, ‘তুই চ না আমার সঙ্গে। বলেছিলিস যে এইসব কাজগুলাের সময় অন্তত থাকবি। দুঃখের একটা ইমােজি পাঠিয়ে টেক্সট ফুটে উঠেছিল, “সরি। সিজন চেঞ্জগলা ব্যাথাঅজান্তেই রাগের। পরশ টের পেয়েছিল মেহুলি। মনে হয়েছিল, রকম অবুঝের কাছে মাথা নােয়ানাে ঠিক হচ্ছে না। শুধু অ্যাটিটিউড নিয়ে যাচ্ছে। তবে ভেতর থেকে মনে হয়েছিল ছেলেটা ঠিক। 

সােজা পরদিন মিঃ ঘােষ-এর ফ্ল্যাটেস্বামীস্ত্রী দুজনেই ইতিহাসের অধ্যাপক। ঝকঝকে ব্যক্তিত্ব। মেহুলি হাত জোড় করে নমস্কার করেছিলআর সরাসরি বলেছিল, কাকু, আমরা এখানে ইয়ংরা মিলে একটা বসন্ত উৎসব অ্যারেঞ্জ করেছি। আপনাকে আর আন্টিকেও কিন্তু আসতে হবে। 

সব শুনে ওনাদের দুজনেরই চোখ গােল গােল হয়ে গিয়েছিলঘােষ আন্টি বলেছিলেন, মা গাে! বাচ্চা বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলাে কী সুন্দর ভেবেছে গাে! নিশ্চই যাবাে। 

মনে হয়েছিল, পারবে। পারা যায়। ফেরার পথে হ্যোয়াটস অ্যাপ চেক করতে গিয়ে দেখতে পেয়েছিল বেদান্তর পার্সোনাল ইনবক্সে মেসেজ, এবার থেকে সারা বছর বসন্ত উদযাপন হােক’।

প্রােগ্রামের প্রস্তুতি দ্রুতই এগিয়ে গিয়েছিলঅবাক হয়েছিল এই ভেবে যে শহুরে আত্মকেন্দ্রিক মানুষও ভালাে প্রচেষ্টায় সাড়া দেয়তাদের কাছে পৌঁছতে হয়। কয়েকদিনের আলাপপরিচয়েই মেহুলি সমস্ত ব্লকের বাসিন্দার কাছে পরিচিত মুখসবাই ওর প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছিল। গান, আবৃত্তি বা নাচ মিলিয়ে ইভেন্ট সাজিয়েও ফেলেছিল চমৎকারওর ব্যস্ততা আর ফোনের বহরে বাবামাও হেসে ফেলেছিল মাঝে মাঝে। নিজেরও ভালাে লাগছিল এভাবে দায়িত্ব নিয়ে ব্যবস্থা করতে। 

যতবার মনে হয়েছে বেদান্ত পুরােটা সঙ্গে থাকলে আরও ভালাে হতাে, ততবার জেদ চেপেছে, প্রােগ্রামটা ঠিকঠাক করারকিছুতেই ওকে টেক্সট বা ফোন করে আর নিচু হতে চায়নি। 

হোঁচট খেয়েছিল প্রােগ্রামের দিন দুপুরে। শুভ্রজিৎ এসে জানিয়েছিল, পলাশ ফুল জোগাড় করা যাচ্ছে না। নিউ মার্কেটেও পাওয়া যায়নি। মেহুলি ভেবেছিল চন্দননগর যাবে কি না। তারপর ভেবেছিল, কৃষ্ণচূড়া বা রাধাচূড়া দিয়ে ম্যানেজ করে নেবে। কিন্তু মন সায় দিচ্ছিল না। প্রথমা উত্তেজিতভাবে এসে বলেছিল বেদান্ত নাকি একটা বড় পলাশ ফুলের প্যাকেট ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে গেছে। অনেক ভােরে বেরিয়ে নাকি। জোগাড় করে এনেছে। বার বার প্রথমা বললেও থাকতে রাজি হয়নি প্রােগ্রামে। ওর নাকি খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। কৌতুহল চাগাড় দিচ্ছিল। পুরােদস্তুর একটা শহুরে ছেলে। কথায় কথায় এ শহরের গুণকীর্তন শুধু। তার কাছে আবার পলাশ ফুলের খোঁজ আছে! 

যতটা আশা করেছিল, তার থেকে অনুষ্ঠান অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়েছিলসন্ধের মৃদুমন্দ আলােয়, হলুদ রং আর পলাশে বসন্তযাপন স্বার্থক মনে হয়েছিলসূর্য ডুবেছিল আর ঠিক তখনই কোকিল ডেকে ওঠায় তৃপ্তির পরম আবেশে ডুবতে ডুবতে মেহুলির মনে হয়েছিল সারা বছর যদি বসন্ত এভাবে ঘিরে থাকত, কী চমৎকারই না হতােআফশােস হয়েছিল এই ভেবে যে বেদান্তকে ওর সাকসেস চোখের সামনেদেখাতে পারল না। তৃপ্তিও পাচ্ছিল। ছেলেটাকে ভুল প্রমাণ করতে পেরেছেঅনুষ্ঠানে বেদান্তর বাবা-মাও এসেছিল। কাকিমা জানিয়েছিল, সারাদিন কোথায় বেরিয়েছিল বেদান্তটায়ার্ড হয়ে নিজের ঘরে রেস্ট নিচ্ছেশেষ পর্যন্ত ফুলগুলাে জোগাড় করে দেবার জন্য থ্যাঙ্কস জানাতে রাতে ফোন করতে গিয়ে দেখেছিল, সুইচড অফ। রাগটা আবার চেপে বসেছিলবেশ কিছুদিন মেসেজ, ফোন তরফে নেই, মেহুলিও করেনি। আজ কলেজে দেখতে পাবে ভেবেছিলপেল নামনটা কেমকেমন করছেঅতটা রাগও আর আসছে নাঅথচ টেক্সট কেন করতে পারছে না, নিজেও জানে না। 

রেডিও অ্যাপে ঢুকে নাইন্টি সেভেন ব্লু মিরচিতে ঢুকল মেহুলিকানে গুঁজে নিল হেড ফোনবা!, আজকের থিমটাও রেডিওতে দারুণ, বসন্ত আর আসে নাস্থির হতে হল ঘােষণায়, সত্যিই বসন্তকে আর পাচ্ছি না এ শহরেতবুও কিছু কিছু মানুষের শিল্প আমাদের বসন্ত ভাবনাকে জাগিয়ে দেয়আমি অর্পণআর আমার সঙ্গে স্টুডিওতে হাজির গড়িয়া থেকে বেদান্ত ভট্টাচার্যহরবােলা শব্দটার সঙ্গে আপনারা নিশ্চয়ই সবাই পরিচিতবেদান্ত মেডিকেল-এর ছাত্রঅবিকল ভঙ্গিমায় সে বিভিন্ন পশু-পাখির স্বরকে নকল করতে পারে। ইতিমধ্যেই আমরা শুনে ফেলেছি বাঘ আর কাকের স্বর। এ শহরে সত্যিই আর কোকিলের কণ্ঠ শােনা যায় নাশুনুন বেদান্তকে, কোকিল কন্ঠেনাইন্টি সেভেন ব্লু মিরচিতে আমি অর্পণ আপনাদের সঙ্গে...। 

হতবাক হতে হয় কিছুক্ষণের জন্যভেতরে একটু কেঁপেও ওঠেভেসে আসে কোকিলের স্বর। পরম তৃপ্তিতে গা এলিয়ে শুনতে থাকে মেহুলি। ভীষণভাবে চেনা লাগছে স্বরকেচলে যায় হােয়াটস অ্যাপ চ্যাট অপশনেএকটা টেক্সট পাঠাতে চায় বেদান্তকেসারা বছর কেন, সারা জীবন বসন্তযাপন করলে কেমন হয়? কি বাের্ড চলতে থাকে ওর আঙুলশহরের বেড়ে ওঠা তাপমাত্রা মােটেও গায়ে লাগছিল না আরওকে ঘিরে নেমে আসছে তখন শুধু বসন্তের আবেশ… 

অলঙ্করণ: দেবাশিস সাহা, ইন্টারনেট 

Trending

Most Popular


Would you like to receive notifications on latest updates? No Yes