jamdani

জানেন কি জেনেভার এই ব্রোকেন চেয়ার মানবমুখী সভ্যতার সমৃদ্ধির ধারক!

ব্রোকেন চেয়ার! নামটা শুনেই একটু অদ্ভুত মনে হচ্ছে তাই না? এটাই স্বাভাবিক।  তবে একটা ভাঙা চেয়ার নিয়ে এত কথা লেখার কী আছে? অবশ্যই আছে।

সেই বিখ্যাত গানটার কথা মনে আছে? ‘এই দুনিয়ায় আছে দেখবার কতো কী জানার কতো কী শেখার’? কিন্তু বাড়ির ঘুপচি ভাঙাচোরা পুরনো জিনিসের মধ্যে পড়ে থাকা যেকোনও ঠ্যাং ভাঙা চেয়ার নয় এটি,  এই ব্রোকেন চেয়ার হলো পৃথিবী বিখ্যাত একটি ভাস্কর্য।

একটা বিশাল চেয়ারের চারটে পায়েই দাঁড়ানোর কথা কিন্তু সে কিনা দাঁড়িয়ে আছে তিনটি পায়ের উপর। আর সামনের বাঁ পাটা ভাঙা। কিন্তু প্রশ্ন উঠতেই পারে তিনটে পা নিয়ে কি করে দাঁড়িয়ে আছে চেয়ারটি। তবে এই চেয়ারটি বিশেষ ভাবে বানানো। যা তিনটি পায়ার উপর দাঁড়িয়ে এবং যেটা দেখতে সারা পৃথিবী থেকে মানুষ আসেন সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে। ইউনাইটেড নেশনস এর অফিস রয়েছে যেখানে। সেই জাতি সংঘের অফিসের গেটের ঠিক উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে আছে এই “ব্রোকেন চেয়ার”। ল্যান্ডমাইনে ও ক্লাস্টার বোমা বিস্ফোরণে পঙ্গুত্বের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে এই চেয়ার দাঁড়িয়ে আছে ১৯৯৬ সাল থেকে।

সুইজারল্যান্ডের এনজিও প্রতিষ্ঠান হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক পল ভারমূলের ব্রেন চাইল্ড হলো এই ব্রোকেন চেয়ার। ১৯৯৬ সালের অক্টোবরে তিনি সুইস ভাস্কর ড্যানিয়েল বারসেটকে অনুরোধ করেন একটি  দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া চেয়ার তৈরি করতে, যেটা সশস্ত্র হিংসার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠবে। বিভিন্ন দেশ এক ল্যান্ড মাইন বিরোধী চুক্তিতে সই করে ১৯৯৭ সালে। তার ঠিক চারমাস আগে ১৮ই আগস্ট ১৯৯৭তে জেনেভায় ইউনাইটেড নেশনস অফিসের ফটকের বিপরীতে বসানো হয় এই চেয়ারটি।এর উদ্দেশ্য ছিল ল্যান্ডমাইনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং আরো বহু দেশ যাতে এই ল্যান্ডমাইন বিরোধী চুক্তিতে স্বাক্ষর করে তার প্রচেষ্টা।

বারো মিটার উঁচু এই  ভাস্কর্যটি পাঁচ টন কাঠ দিয়ে তৈরি শতাব্দীর এক অন্যতম শ্রেষ্ঠ শিল্প প্রতীকী হিসেবে খ্যাত। চেয়ারটি যেখানে বসানো তার নিচেই খোদাই করে লেখা আছে “সশস্ত্র হিংসার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ। এই ভাঙা চেয়ার হচ্ছে ভঙ্গুরতা ও সামর্থ্য, অনিশ্চয়তা ও স্থিতিশীলতা, নিষ্ঠুরতা ও মর্যাদার প্রতীক”।

Trending

Most Popular


Would you like to receive notifications on latest updates? No Yes