jamdani

গোঁফের বিপ্লব

গোঁফ নিয়ে সবচেয়ে বিখ্যাত বিপ্লবের নাম বোধহয় ‘মভেম্বর’। মোচ এর ‘ম’, নভেম্বর এর ‘ভেম্বর’ মিলেমিশেই ‘মভেম্বর’। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে ১৯৯৯ সালে এই ‘নো- শেভ- নভেম্বর’ বা ‘মভেম্বর’ আন্দোলন শুরু হয়ে ধীরে ধীরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

আন্দোলনের নিয়মকানুন জলের মতো সরল। ফি বছর নভেম্বর মাসের পহেলা দিনে ক্লিন শেভড হয়ে মভেম্বর ডট কমে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। রেজিস্টার্ড গুঁফাদের নাম হবে ‘মো-ব্রো’। তারপর টানা নভেম্বর মাস গোঁফ কাটা চলবে না। গোঁফের যত্ন নেওয়া যেতে পারে কিন্তু দাড়ি বা বড়ো জুলফি নৈব নৈব চ। এরপর আন্দোলনের শরিক হিসেবে প্রস্টেট ক্যানসার, টেস্টিকুলার ক্যানসার, ডিপ্রেশন এবং মূলত পুরুষদের রোগ বালাই নিয়ে বিশ্বজোড়া সচেতনতা তৈরি করতে হবে। মভেম্বর ফাউন্ডেশনের জন্য চাঁদা তুলতে হবে। অন্য পুরুষ এবং আশেপাশের সকলকে উৎসাহিত করতে হবে।

অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড হয়ে আয়ারল্যান্ড, কানাডা, ডেনমার্ক, স্পেন, আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকার পাশপাশি ভারতের পুরুষরাও মভেম্বরে সানন্দে যোগ দিচ্ছেন। বিবিধের মাঝে ক্রমশ মহান আকার নিয়েছে ‘মভেম্বর’।

২০১২ সালের একটি সমীক্ষা অনুযায়ী বিশ্বের একশোটি শক্তিশালী এনজিও’র অন্যতম মভেম্বর ফাউন্ডেশন। শুধুমাত্র ২০১০ সালেই এই সংস্থা পঁচানব্বই মিলিয়ন ডলার চাঁদা তুলেছিল। বিভিন্ন দেশের ক্যানসার রিসার্চ সোসাইটি ও ইনস্টিটিউটে মভেম্বর ফাউন্ডেশনের দানধ্যানের পরিমাণও নেহাত মন্দ নয়।

নভেম্বরের শেষে বিভিন্ন দেশের জাতীয় সেরা গুঁফো মো-ব্রোদের নিয়ে গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত হয়। ফ্যানদের ভোট এবং জুরিদের বিচারে নির্বাচিত হন সেরার সেরা ‘ইন্টারন্যাশনাল ম্যান অব মভেম্বর’। বিজয়ীকে সারা বছর মভেম্বর বিপ্লবের প্রচার পতাকা বহন করতে হয়। গুঁফো মুখ নিয়ে আন্দোলনের প্রচার চালাতে হয়। এই ফাউন্ডেশন বলে থাকে ‘নলেজ ইজ পাওয়ার মুস্ট্যাচ ইজ কিং।’ মভেম্বর বিপ্লবের রাজকীয় ব্যাপারস্যাপারে কিঞ্চিৎ সুকুমার রায় মিলিয়ে বলা যায় ‘গোঁফকে বলে তোমার আমার গোঁফ কি কারো কেনা/ গোঁফ বাড়ালেই ফান্ড বাড়বে গোঁফ দিয়ে যায় চেনা।’

Trending

Most Popular


Would you like to receive notifications on latest updates? No Yes