jamdani

অ্যালোপেশিয়া টাকপোকা নয়

প্রচলিত নাম টাকপোকা। আদতে টাকের সমস্যা হলেও, জেনারেল বল্ডনেস-এর সঙ্গে এর অনেক ফারাক। চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা। জানাচ্ছেন, কেয়া শেঠ ট্রাইকোলজি ও অ্যাসথেটিক ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞগণ।

অ্যালোপেশিয়া এরিয়াটা কী?

টাকের সমস্যায় তো ভোগেন অনেকেই। কিন্তু মাথা জুড়ে, মূলত মাথার সামনে থেকে চুল কমতে কমতে টাক পড়তে শুরু করে। চুল পড়ার জন্য কিন্তু টাক পড়ে না। টাক পড়ে, চুল পড়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে হেয়ার গ্রোথ না হলে। কিন্তু অ্যালোপেশিয়া একটি অসুখ। মাথার নির্দিষ্ট জায়গায় কয়েনের মাপে টাক পড়ে। তবে বিনা চিকিৎসায় অ্যালোপেশিয়ার প্রকোপ বাড়ে। ১-২টি কিংবা ৮-১০টা অ্যালোপেশিয়া প্যাচ জুড়ে বড় ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়। ডাক্তারি ভাষায়, এটি একটি অটো ইমিউনড ডিসঅর্ডার। স্ক্যাল্পে বা দাড়িতে অ্যালোপেশিয়া হতে পারে। এই ধরনের অসুখ সারাতে দীর্ঘদিনের ট্রিটমেন্ট প্রয়োজন। এক-দেড় বছর অবধি সময় লাগে সম্পূর্ণ সারতে। কিন্তু বিশেষ কয়েকটি অসুখ থাকলে, যেমন লাইকেন প্লেনোপাইলেরিস হলে অ্যালোপেশিয়া ফিরে আসে। লোকমুখে অ্যালোপেশিয়া টাকপোকা বলে পরিকচিত। তবে এতে পোকার কোনও ভূমিকা নেই। আর এই রোগ ছোঁয়াচেও নয়। অ্যালোপেশিয়া নানা ধরনের হয়-

  • হরমোনাল বা অ্যান্ড্রোজেনেটিক
  • অ্যালোপেশিয়া এরিয়াটা
  • অ্যালোপেশিয়া টোটালিস
  • অ্যালোপেশিয়া ইউনিভার্সালিস

অ্যালোপেশিয়া কি নির্দিষ্ট কোনও বয়সে হয়?

সাধারণ টাক ও অ্যালোপেশিয়ার মধ্যে অনেক ফারাক। এটা একটি রোগ। যেকোনও বয়সেই হতে পারে।

অ্যালোপেশিয়া কী কী কারণে হয়?

অ্যালোপেশিয়া হওয়ার কারণ অনেক। মূলত –

  • বংশগত
  • পুষ্টির অভাব
  • অ্যালার্জির কারণে
  • ট্রিকাটিলো ম্যানিয়া (অনেকে নিজেই নিজের মাথা থেকে চুল টেনে ছেঁড়ে)
  • সেকেন্ডারি ডিসিজের কারণে(যেমন – অ্যামাইলোডোসিস, লাইকেনো প্লেনোপাইরেসিস)
  • কোনও ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় (যেমন – কেমোথেরাপি বা হাইপারটেনশনের ওষুধ দীর্ঘদিন ধরে খেলে অ্যালোপেশিয়া আসতে পারে।)

এই রোগের লক্ষণগুলি কী কী?

  • মাথায় কোনও একটি জায়গা বা কয়েকটি জায়গা থেকে কয়েনের মতো গোলাকার হয়ে চুল উঠে যাওয়া।
  • এক্ষেত্রে সামগ্রিকভাবে সারা মাথা থেকে চুল ওঠা বেড়ে যায় না। কোনও একটা জায়গাই ফাঁকা হয়ে যায়।
  • এই গোলাকার ফাঁকা অংশ মাথার সামনে কিংবা দু’পাশে কিংবা ভ্রূ-তে অথবা শরীরের অন্য কোনও স্থানে দেখা যেতে পারে।

বাচ্চারা কি অ্যালোপেশিয়ায় আক্রান্ত হয়?

হতেই পারে। আমাদের দেশে সাধারণত পুষ্টির অভাবেই বাচ্চাদের অ্যালোপেশিয়া হয়। প্রোটিন এনার্জি ম্যালনিউট্রিশন, যাজে সংক্ষেপে বলা হয় PEN- বাচ্চাদের অ্যালোপেশিয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া বিভিন্ন রকম ভিটামিনের ঘাটতি ঘটলে, বা বাচ্চা রিকিটে আক্রান্ত হলে অ্যা লোপেশি অন্যতম কারণ। এছাড়া বিভিন্ন রকম ভিটামিনের ঘাটতি ঘটলে, বা বাচ্চা রিকিটে আক্রান্ত হলে অ্যালোপেশিয়া হতে পারে।

স্ট্রেসের সঙ্গে অ্যালোপেশিয়ার কী সম্পর্ক?

এখনও পর্যন্ত স্ট্রেসের সঙ্গে অ্যালোপেশিয়ার কোনও সরাসরি যোগাযোগ প্রমাণিত নয়। ট্রিকাটিলোম্যানি-র মতো অসুখ থাকলে অ্যালোপেশিয়া আসতেই পারে।

এর চিকিৎসা কী?

কী কারণে অ্যালোপেশিয়া হয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে চিকিৎসা পদ্ধতি। খাবার ও লাগানোর ওষুধ দেওয়া হয় তো বটেই, কোনও-কোনও ক্ষেত্রে, ইনজেকশনও পুশ করতে হয়। অ্যালোপেশিয়ার চিকিৎসা ট্রাইকোলজিতেও হয়। ধের্য সহকারে ট্রিটমেন্ট করলে অ্যালোপেশিয়া এরিয়াটা ৯০ শতাংশ পর্যন্ত সেরে যায়।

Trending

Most Popular


Would you like to receive notifications on latest updates? No Yes